ইভিএম প্রকল্প খুব একটা এগোচ্ছে না

সময় মতো ইভিএম প্রকল্প পাস না হলে ব্যালটেই ভোট হবে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ইভিএমের নতুন প্রকল্প পাস না হলে আমাদের ব্যালটেই যেতে হবে। রবিবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি কাছে এ কথা বলেন। ইভিএম প্রকল্প খুব একটা এগোচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ইভিএম প্রকল্প খুব একটা এগোচ্ছে বলে মনে হয় না। এটা আসলে খুব বেশি আগায়নি। প্রকল্পের অর্থপ্রাপ্তি সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করবো বলে আমরা বলেছিলাম। এক্ষেত্রে প্রকল্প পাস না হলে আমাদের কাছে বর্তমানে যা আছে তাই দিয়েই ভোট করবো।

এর আগে ইভিএম প্রসঙ্গ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এই বৈঠকে অন্যান্য কমিশনার ছাড়াও বুয়েট শিক্ষক প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক মোহাম্মাদ কায়কোবাদ, শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. হায়দার আলী, তথ্য বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলামসহ প্রযুক্তিবিদরা অংশ নেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, ইভিএম নিয়ে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা হয়নি। এটার রীতিও নেই। ইসি সচিবালয় হয়তো কথা বলবে। আমাদের সক্ষমতা যা আছে আমরা তাই করবো। জানা মতে আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী কেবল ৭০-৮০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের বিষয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, আরপিও বিল আকারে রেডি করা হচ্ছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে আমাদের কাছে পাঠাবে বলে আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এদিকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি ও সরবরাহের কাজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন বুয়েট শিক্ষক প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক মোহাম্মাদ কায়কোবাদ। ইসির সঙ্গে একান্ত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ইসির অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো উচিত। এনআইডি অন্য যেকোনও প্রতিষ্ঠানেই যাক না কেন, তাদের তো এই অভিজ্ঞতা নাই। কাজেই এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো উচিত এবং ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়া উচিত। তিনি বলেন, অনেক সময় একটি কাজ যখন সুষ্ঠুভাবে চলতে থাকে তখন সেটা আমরা অন্য জায়গায় নিয়ে যাই, নানা ধরনের সমস্যায় ভোগী। কো-অর্ডিনেশনে আমরা মোটেই ভালো না। সেজন্য সুষ্ঠুভাবে কাজটা যেন হয় এটাই আমরা চাই।

ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ডাটাবেজ যেখানেই থাকুক সবগুলো একেবারে আইডেন্টিক্যাল হতে হবে। এটায় দ্বিমত নাই। যদি আইডেন্টিক্যাল না থাকে এটা হাস্যকর হয়ে যাবে। এখন এটা কমিশনে আছে না অন্য কোথাও আছে, এটা তো মেটার করে না।

অধ্যাপক মো. হায়দার আলী বলেন, মালিকানা হচ্ছে রাষ্ট্রের। সরকারই টাকা দিয়ে এটা (এনআইডি) তৈরি করেছে। টেকনিক্যাল পয়েন্ট থেকে ইতিবাচক, নেতিবাচক আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত কমিশন বা সরকার নেবে। বিষয়টা তারা আরও জানবেন। তারপর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। তিনি বলেন, কোনও কোনও দেশে কমিশনের কাছে আছে। কোনও কোনও দেশে সরকারের কাছে আছে। কার কাছে থাকা উচিত আমরা কোনোটাই জোর দেইনি।

মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, এনআইডি দেশের বড় সম্পদ। সুষ্ঠুভাবে মেইনটেন হোক এবং যেখান থেকেই হোক, আমরা সেটাই চাই।