গত বছর ৩২৫০০ জনকে সহায়তা দিয়েছে লিগ্যাল এইড: আইনমন্ত্রী

দেওয়ানি কার্যবিধিতে জেলা এইড অফিসারের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘লিগ্যাল এইড অফিসগুলোতে অসহায় সাধারণ বিচারপ্রার্থীকে আইনি পরামর্শ, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি এবং মামলায় আর্থিক সহায়তা সেবা দেওয়া হয়। ২০২২ সালে ৩২ হাজার ৫৫৪ জনকে মামলা দায়েরের জন্য আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে লিগ্যাল এইড অফিসে এডিআর অর্থাৎ বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কার্যক্রম শুরু হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কেবল ২০২২ সালে ৩৭ হাজার ৮৬০ জন মামলা দায়েরের আগেই এডিআর করার জন্য লিগ্যাল এইড অফিসে এসেছে। এ পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষ এখন মামলা করার আগে এডিআর বা মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধ মিটাতে উৎসাহ বোধ করছে। সারা দেশের লিগ্যাল এইড অফিসগুলো শতভাগ দায়িত্ব ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান আইন ও বিধিমালার মাধ্যমেই বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে। তাই এ পর্যায়ে প্রচলিত আইন সংশোধনের পরিকল্পনা সরকারের নেই।’

গণফোরামের সংসদ মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ কমিয়ে আনতে আইনানুগ কর্তৃপক্ষের মাধ্যেমে ছাড়পত্র দেওয়ার বিধান করার কোনও পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। তবে জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ কমাতে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের ভূমি নিবন্ধনে জনবান্ধব ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসকে প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে ইতোমধ্যে আন্তসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।’

সারা দেশের দলিল নিবন্ধন ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজড করার লক্ষ্যে ‘দলিল নিবন্ধন ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ শীর্ষক একটি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের আন্তসংযোগ কার্যক্রমকে অধিক ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে আইন ও বিচার বিভাগ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উভয় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি আন্তসংযোগ কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়মিত পর্যালোচনা করছে।’

সরকারের কার্যক্রমের ফলে দেশের ভূমি ব্যবস্থা স্বচ্ছ ও সমৃদ্ধ হয়েছে বলে সংসদে দাবি করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মানুষের ভোগান্তি লাঘব হয়েছে। আশা করি, সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ ক্রমান্বয়ে কমবে।’