বাংলাদেশ নির্দোষ ও ভুক্তভোগী: কৃষিমন্ত্রী

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নির্দোষ ও ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। এই যুদ্ধের ফলে সারের দাম চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, খাদ্যশস্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ও খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলেছে। এই নেতিবাচক প্রভাব নিরসনে উন্নত বিশ্বকে নমনীয়, সহজ ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) জার্মানির বার্লিনে ‘১৫তম বার্লিন কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে’ মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

রবিবার (২২ জানুয়ারি) কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নত দেশগুলোকে দায়িত্বশীল এবং আরও তৎপর হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি খাদ্য ও কৃষি উপকরণকে যুদ্ধ ও অবরোধের বাইরে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন।

জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (বিএমইএল) আয়োজনে ৪ দিনব্যাপী (১৮-২১ জানুয়ারি) ‘১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (জিএফএফএ) শেষ দিনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশের কৃষিমন্ত্রী ও ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার ও বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার ও কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে জানানো হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অনুযায়ী বৈশ্বিক ক্ষুধা নিরসন (জিরো হাঙ্গার) করার কথা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—ক্ষুধায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১ সালে ৭০ কোটি ২০ লাখ থেকে ৮২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ক্ষুধায় আক্রান্ত হয়েছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৪ কোটি ৬০ লাখ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ১৫ কোটি বেশি। বর্তমানে বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে খারাপ খাদ্য সংকট পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। প্রজাতি বিলুপ্তি, কোভিড ১৯ আর যুদ্ধ খাদ্য সংকটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এই পরিস্থিতি সামনে রেখে কীভাবে ক্রাইসিস-প্রুফ খাদ্য ব্যবস্থা, জলবায়ু সহনশীল খাদ্য ব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং টেকসই বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহযোগিতা বাড়ানো যায়—এই চারটি বিষয়ে সম্মেলনে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। 'ফুড সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন: এ ওয়ার্ল্ডওয়াইড রেসপন্স টু মাল্টিপল ক্রাইসিস' শিরোনামে এ সম্মেলনে চার দিনে অংশগ্রহণকারী দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কৃষিমন্ত্রীরা আলোচনা করে একটি ‘যৌথ ইশতেহার’ (কমিউনিক) ঘোষণা করেছেন।