সীমান্তের ৮ কিলোমিটারের বাইরে বিজিবির গুলিবর্ষণ: নির্বাহী তদন্ত চায় প্রশাসন

সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মাধ্যমে গুলিবর্ষণের ঘটনার নির্বাহী তদন্ত (এক্সিকিউটিভ ইনকোয়ারি) চায় সংশ্লিষ্টরা। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রস্তাবনায় এমন একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। আগামী ২৬ জানুয়ারি সম্মেলনের ষষ্ঠ অধিবেশনে এ নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরে বিজিবি সদস্যের মাধ্যমে ফায়ারের ঘটনা ঘটলে নির্বাহী তদন্তের (এক্সিকিউটিভ ইনকোয়ারি) মাধ্যম যৌক্তিকতা যাচাই করা প্রয়োজন বলে মনে করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। এ প্রস্তাবের সপক্ষে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, পার্বত্য জেলাগুলোতে সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরে বিজিবির গুলিবর্ষণের ক্ষেত্রে নির্বাহী তদন্ত হবে কিনা বা গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটলে কোন পদ্ধতিতে নির্বাহী তদন্ত করা হবে, সে বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশনা নাই। এতে সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরে দেশের অভ্যন্তরে বিজিবি সদস্যদের মাধ্যমে গুলিবর্ষণের ঘটনার আইনগত নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এ সংক্রান্তে যদি সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকে তাহলে গুলিবর্ষণের ঘটনা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।

এই আইনগত সমস্যা থেকে উত্তরণ কিংবা বাস্তবায়নের সুপারিশে বলা হয়েছে, সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরে বিজিবি সদস্যের মাধ্যমে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটলে পুলিশ রেগুলেশনস-১৯৪৩-এর মতো বিজিবির ক্ষেত্রেও গুলিবর্ষণের যৌক্তিকতা যাচাইয়ে নির্বাহী তদন্তের (এক্সিকিউটিভ ইনকোয়ারি) বিধান করা যেতে পারে।

জুয়া আইন যুগোপযোগী করার প্রস্তাব

‘বঙ্গীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন–১৮৬৭’-এর কতিপয় ধারা যুগোপযোগী ও স্পষ্টীকরণেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ প্রস্তাব আসে নরসিংদীর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এ আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি তিন মাস কারাদণ্ড বা ২০০ টাকা জরিমানা, ৪ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি এক মাস কারাদণ্ড বা ১০০ টাকা জরিমানা এবং ১১ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি এক মাস কারাদণ্ডসহ ৫০ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এটা বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়। প্রস্তাবে বলা হয়, যুগের পরিবর্তনে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও ডিভাইসের মাধ্যমে জুয়া খেলা হলেও তা আইনের আওতাভুক্ত না হওয়ায় শাস্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য এই আইনের বিভিন্ন ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছর কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান করা যেতে পারে।

মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ তফসিলভুক্তকরণের প্রস্তাব

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি পদে অধিষ্ঠিত না হয়েও নিজেকে সেই পদের পরিচয়ে পরিচয় দেওয়া এবং বিভিন্ন বাহিনীর ইউনিফর্ম ব্যবহার করে প্রতারণা করা—দণ্ডবিধির ১৭০, ১৭১ ও ৪১৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভুয়া পরিচয়দানকারী ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা গেলেও মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯-এর তফসিলভুক্ত না হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয় না। তাই মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ তফসিলভুক্ত করা হলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।

এছাড়াও সরকারি দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা বা বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় জরিমানা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসন।