ডেল্টা প্ল্যানের ৮০ প্রকল্প বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে সমঝোতা

ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর অধীনে আগামী ১০ বছরে প্রায় ৮০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এজন্য প্রয়োজন হবে প্রায় ৩২০০ কোটি ডলার। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের কৃষি, শিল্প উৎপাদন, সেবা ও লজিস্টিক খাতে সহনশীলতা ও প্রতিযোগিতামূলক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস সরকারের মধ্যে  ২০২২-৩২ মেয়াদে একটি সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

এ বিষয়ে নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ডেল্টা প্ল্যানের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ২০২৬ এর পরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে। এই দুটি পরিবর্তনকে মাথায় রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়া কী হবে, সেটি নির্ধারণে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করাও এই প্ল্যানের লক্ষ্য। কারণ উৎপাদনশীল খাতের নেতৃত্ব দিচ্ছে বেসরকারি খাত।’

কৃষি, শিল্প উৎপাদন, সেবা ও লজিস্টিক খাতে সহনশীলতা ও প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে আমরা নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতা নিচ্ছি। ২০১২ থেকে ২০২২ পর্যন্ত এটির পরিকল্পনা ও বিভিন্ন প্রকল্প চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে তারা আমাদের সহায়তা দিয়েছে।’

প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কৃষিতে পানির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কম পানি ব্যবহার করে বেশি উৎপাদন করা সম্ভব হলে, পানির সর্বোত্তম ব্যবহার করা হবে। অপরদিকে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। নেদারল্যান্ডসে এক ধরনের টমেটো বীজ পাওয়া যায়, যেটি উৎপাদনে মাত্র ছয় লিটার পানির প্রয়োজন হয়। সাধারণভাবে একটি টমেটো গাছে ৩০ লিটার পানির প্রয়োজন হয়।’

অর্থায়ন

ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে অর্থায়ন। ওই প্ল্যান অনুযায়ী প্রতি বছর মোট দেশজ উৎপাদনের ২.৫ শতাংশ এটি বাস্তবায়নে খরচ করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে সরকার করবে ১.৫ শতাংশ, ০.৫ শতাংশ করবে দেশের বেসরকারি খাত এবং ০.৫ শতাংশ করবে বিদেশের বেসরকারি খাত।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দেশের বেসরকারি খাতকে এ বিষয়ে সচেতন করার প্রয়োজন রয়েছে। তারা যদি এগিয়ে আসে, তবে বিদেশিরাও এগিয়ে আসবে।’

সমন্বয়

এই প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য অন্তত ১৪টি মন্ত্রণালয় এবং প্রায় ১০টি সংস্থা জড়িত এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কৃষির একটি প্রকল্পের সঙ্গে হয়তো পানি বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা খাদ্য মন্ত্রণালয় জড়িত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সঠিক সমন্বয় না হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে।’