জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

জাতিসংঘ সদর দফতরে টানা সপ্তমবারের মতো যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের যৌথ অংশীদারত্বে ইভেন্টটির আয়োজন করে ডেনমার্ক, গুয়াতেমালা, হাঙ্গেরি, ভারত, মরক্কো ও পূর্ব তিমুর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের সভাপতি সাবা কোরেশি।02

এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিগত বছরের মতো এ বছরও জাতিসংঘের ছয়টি দাফতরিক ভাষায় গোটা অনুষ্ঠানটি অনুবাদের ব্যবস্থা রাখা হয়। নিউইয়র্কভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রী চিন্ময় কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিম সংগীত "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি" পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।03

অনুষ্ঠানটির আলোচনা পর্বে সকল সহযোগী দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি, জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি ও কনফারেন্স ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, নীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, ইউনেস্কো নিউইয়র্ক অফিসের প্রতিনিধি এবং নিউইয়র্ক শহরের মেয়রের প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। তাছাড়া স্প্যানিশ ভাষাভাষী ফ্রেন্ডস গ্রুপের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে নিযুক্ত কিউবার উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ভাষা বিষয়ক এনজিও কমিটির সভাপতি বক্তব্য রাখেন।05

উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা শহীদদের এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।06

তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই জাতির পিতার নেতৃত্বে শুরু হয় বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম, যা চূড়ান্ত পরিণতি পায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের মাধ্যমে। মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশির উদ্যোগকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পূর্ণ স্বীকৃতি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন রাষ্ট্রদূত মুহিত।07

সাধারণ পরিষদের সভাপতিসহ অন্যান্য বক্তারা জাতিসংঘে বহুভাষাবাদ ও মাতৃভাষার প্রচারে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। এ বছরের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হলো 'বহুভাষায় শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা'। মাতৃভাষাকে ভিত্তি করে বহুভাষায় শিক্ষা প্রদান করা হলে তা সারা বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।