প্রবাসীদের ফেলে রাখা জমিতে সরকার চাষাবাদ করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘প্রবাসীদের অচাষকৃত জমিতে সরকার চাষাবাদ করবে। পুরো বিশ্বে ১ কোটি ২০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন। তাদের যথেষ্ট পরিমাণ জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে থাকে। আগে আমরা জমিতে একটা ফসল চাষ করতাম। এখন একের অধিক ফসল করি। কিন্তু বিশেষ করে প্রবাসীদের জমি কেউ চাষ করে না। কারণ, প্রবাসীরা তাদের জমি আত্মীয়র কাছে দিতে ভয় পায় এবং অন্য কাউকে দিতেও ভয় পায়। সরকার যদি তাদের জমিতে চাষাবাদ করে, সে ক্ষেত্রে তাদের ভয় কম থাকে।’

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘এলডিসি হতে উত্তরণে বাংলাদেশের কৃষি: অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক বিএসটি নাগরিক সংলাপ আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অনেক প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের ভাষ্য, সরকার যদি আমাদের জমি নেয়, তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমি মনে করি এ বিষয়ে আমাদের চিন্তাভাবনার সুযোগ আছে।’

বাংলাদেশে অ্যাগ্রো প্রসেসিং খাতে ব্যাপক ঘাটতি আছে বলে মন্তব্য করে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশে অ্যাগ্রো প্রসেসিং খাতে ব্যাপক ঘাটতি আছে। আমরা এখনও বিদেশ থেকে পটেটো চিপস কিনি। কারণ, আমরা সেই ধরনের অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি করতে পারিনি। এ কারণে বিদেশে রফতানি করতে পারি না। তবে এখানে অধিকতর বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুগান্তকারী অবস্থানে আছে। প্রায় ৪০ লাখ টন খাদ্য বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদার দ্বিগুণ আলু উৎপাদন হয়। কিন্তু সেগুলো ঠিকমতো রফতানি করতে পারছি না। এ ক্ষেত্রে সাপ্লাই চেইন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে, যাতে আমরা এ অবস্থার উন্নতি করতে পারি। বিভিন্ন দেশ উন্নত মানের কৃষির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ আয় করে। আমাদেরও এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে। যাতে কৃষি থেকে অধিক আয় করতে পারি।’

ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এলডিসি অর্জন করতে যাচ্ছি ২০২৬ সালে। আমি আনন্দিত যে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) অনেক দেশ আমাদের বলেছে তারা ২০২৯ সাল অর্থাৎ তিন বছর পর্যন্ত আমাদের সব সুযোগ-সুবিধা দেবে। এ বিষয়ে কানাডার উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়েছে। উন্নত কৃষির ক্ষেত্রে আমাদের মার্কেটিং এবং সাপ্লাই চেইনে কাজ করার সুযোগ আছে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। সভায় কি-নোট উপস্থাপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টর সাধারণ সম্পাদক টি এইচ এম জাহাঙ্গীর।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান লিটু সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদ সভাপতি অধ্যাপক ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব ড. মো নেয়ামুল ইসলাম প্রমুখ।