রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) মুরব্বিয়ানা করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সিইসি বলেন, ‘আমরা তাদের (রাজনৈতিক দল) বারবার আবেদন জানাচ্ছি আপনারা আসুন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদের মধ্যে যদি মতপার্থক্য থাকে, সেটা আপনারা নিরসন করার চেষ্টা করুন। কারণ নির্বাচন কমিশন মুরব্বিয়ানা করতে পারবে না। আমরা বিনীতভাবে সব রাজনৈতিক দলকে বলবো, আপনারা যেকোনও প্রকারেই হোক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভারসাম্য সৃষ্টি করুন।’
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে এক শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমার সহকর্মীরা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন যে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। সার্বিকভাবে মোটেই কম হয়নি। এটা সঠিক তথ্য নয়। কিছু কিছু ভোটে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে।’
ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘আমরা যেটা অনুমান করেছি, বাস্তবতার নিরিখে, ভোট যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, ব্যাপকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, তখন ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (উপনির্বাচনে) ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে কারণ সেখানে সময় বাকি আছে মাত্র ১০ মাস। আর সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়নি। আপনারা ইউনিয়ন কাউন্সিলের ভোট দেখেছেন, সেখানে কিন্তু উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল এবং ইভিএমে হয়েছে। ইভিএমে ভোটে বলা হয় ধীরগতি, সেখানেও উপস্থিতি যথেষ্ট ভালো ছিল। আমরা আশা করি আগামীতে ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে, সেখানে উপস্থিতি যথার্থ হবে সেই আশাবাদ আমি ব্যক্ত করছি।’
সিইসি বলেন, ‘বিভিন্ন কারণেই ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। আবহাওয়াগত কারণ হতে পারে, দুর্যোগের কারণে হতে পারে, শীতের কারণে হতে পারে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হলো ভোটাররা এসেছেন কি না, তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে কি না, তারা ভোট দিতে পেরেছেন কি না, সেটাই বিশেষভাবে পরিধানযোগ্য আমাদের কাছে।’
ভোটারদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘কেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব হচ্ছে প্রথমত ভোটারের নিজের। রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল একটা দায়িত্ব রয়েছে। তাদের সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন, আমরা ভোটটা আয়োজন করবো। আমরা আপনাদের ব্যালট পেপার সাপ্লাই করবো, বক্স সাপ্লাই করবো এবং আমরা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সংস্থাগুলো আছে তাদের স্ট্রিকলি বলে থাকি আপনারা ভোটকেন্দ্রের চারপাশে প্রত্যাশিত যে আইনশৃঙ্খলা এবং অনুকূল পরিবেশ, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন। তাই দায়িত্বটা কার? দায়িত্বটি সামগ্রিক সমন্বয়ের। এটা আপনাদের অনুধাবন করতে হবে। এককভাবে এই দায়িত্ব কখনোই নির্বাচন কমিশনের নয়।’
দলগুলো কি নির্বাচনমুখী, এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা আগেও বলেছি, তাদের প্রতি আমরা বারবার আবেদন জানাচ্ছি আপনারা আসুন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদের মধ্যে যদি মতপার্থক্য থাকে, সেটা আপনারা নিরসন করার চেষ্টা করুন। কারণ নির্বাচন কমিশন মুরব্বিয়ানা করতে পারবে না। কিন্তু আমরা বিনীতভাবে সব রাজনৈতিক দলকে বলবো, আপনারা যেকোনও প্রকারেই হোক, নির্বাচনে অংশ নিন এবং নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভারসাম্য সৃষ্টি করুন, যাতে এই ভারসাম্যের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রে একধরনের নিরপেক্ষতা ও যথার্থতা প্রতিষ্ঠিত হয়।’
আরও পড়ুন: