‘বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ বৈঠক কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছে’

পাকিস্তানে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পরে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু প্রথমে লন্ডনে যান এবং ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ-এর সাথে তাঁর আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। দুই নেতার ওই বৈঠকই বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের বিগত ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনীম।

সোমবার লন্ডনে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতার ৫২তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এ কথা জানান। তিনি বলেন, আগামীতে এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জলবায়ু, প্রতিরক্ষা-নিরাপত্তা ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সহযোগিতার বিষয়ে আরও গভীর হবে।Flag Hoisting

হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, “৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার আদর্শই অনুসরণ করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।Guests

লন্ডনের কেনজিংটন টাউন হলে ওই বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি ও ডিজিটাল অর্থনীতি এবং লন্ডনবিষয়ক মন্ত্রী পল স্কালি এবং ডিপার্টমেন্ট অব লেবেলিং-আপ, হাউজিং ও কমিউনিটিবিষয়ক মন্ত্রী ফেলিসিটি বুকান সম্মানিত অতিথি হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বক্তব্যে রাখেন।বক্তৃতা করছেন ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি

ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য মানবিকতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণ শরণার্থী হিসেবে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন, সেই অভিজ্ঞতা, মমতা ও মানবিকতাই আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের প্রতি প্রদর্শন করছেন।”বক্তৃতা করছেন ব্রিটিশ মন্ত্রী ফেলিসিটি বুকান

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ৫০ বছরের সুদীর্ঘ কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী ফেলিসিটি বুকান বলেন, “গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার বিষয়ে দুইদেশের মধ্যে গভীর আদর্শিক মিল রয়েছে। বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।”

তিনি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ আরও বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি তাঁর বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতার প্রশংসা করেন।