একাত্তরের গণহত্যাকে আইএজিএস-এর স্বীকৃতি বড় অর্জন: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)। এর ফলে একাত্তরের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের পথে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়েছে বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস-এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মত দেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের পথে আমাদের আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। এটি আমাদের বড় অর্জন। এই অর্জনকে সঙ্গে নিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য আমাদের ধারাবাহিক কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’ তিনি বাংলাদেশ জেনোসাইডের স্বীকৃতি আদায়ের আন্দোলনে জড়িত বিশেষজ্ঞ, গবেষক, অ্যাক্টিভিস্টদের অভিনন্দন জানান।

জেনোসাইড বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএজিএস ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’ ঘোষণা করে প্রস্তাব পাস করেছে। সোমবার (২৪ এপ্রিল) আইএজিএস-এর পক্ষ থেকে ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড সংক্রান্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ভোটদাতা ২১৮ জন সদস্যের মধ্যে ২০৮ জন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন, যার মাধ্যমে এই প্রস্তাব নিরঙ্কুশ সমর্থনে পাস হয়। এ ঘোষণার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে একাত্তরে সংঘটিত গণহত্যার বিশ্বজনীন স্বীকৃতির প্রয়াসে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ গৃহীত হলো।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আইএজিএস-এর এ স্বীকৃতির জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেক দেরিতে হলেও তারা অনুধাবন করতে পেরেছেন যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ওপর কী নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও জেনোসাইড সংঘটিত হয়েছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই এবং আশা করি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রেও তাদের এই সমর্থন ও প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘যারা কোনোভাবেই যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিল না, সেইসব সাধারণ নিরীহ, নির্বিরোধী মানুষ এমনকি নারী ও শিশুদের ওপর পাকিস্তান বাহিনী যে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এত কম সময়ে এত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই।’ খবর বাসস।