তথ্যফাঁস: সার্ভিস পার্টনারদের নজরদারিতে রাখবে ইসি

সার্ভিস পার্টনারদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগের সার্ভার থেকে এনআইডি তথ্য যাচাইকারী ১৭১টি প্রতিষ্ঠানকে নজরদারিতে রাখবে তারা।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত দেশ সেরা প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে আয়োজিত বৈঠকে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।

ইসির এনআইডি অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং টেকনিক্যাল পারসনদের নিয়ে বসেছিলাম। তাদের মতামত, পরামর্শ নিয়েছি। আমরা এগুলো বাস্তবায়নের জন্য ১৭১টি পার্টনারের সঙ্গে কথা বলবো। তখন আরও বেশি টেকনিক্যাল পারসনদের নিয়ে বসবো।

পিরিয়ডিক্যাল অডিটের পরামর্শ এসেছে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের যে কাজগুলো সামনে রয়ে গেছে ফিজিক্যাল ও টেকনিক্যাল সিকিউরিটি বাড়াতে হবে। আমাদের এখান (এনআইডি সার্ভার) থেকে কোনও কিছু (তথ্যফাঁস) হয়নি।

তিনি বলেন, এটার জন্য জন্য সরকারের আইসিটি বিভাগ একটি টেকনিক্যাল কমিটি করেছে। সেখানে আমাদের লোকজনকে কো-অপ করার জন্য বলেছি, যাতে আমরা আমাদের প্রিভেন্টিভ ব্যবস্থা নিতে পারি। আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি না হলে আমাদের ভারনারেবল থাকতে হবে।

কোনও লুপহোলস (ফাঁকফোকর) আছে কিনা— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের এখানে কোনও লুপহোল এখন পর্যন্ত নেই। তবে আমাদের সিস্টেমকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে হবে। আমরা যাতে পিরিওডিক্যাল অডিট করতে পারি, টেকনিক্যাল কমিটি মাঝে মাঝে বসে দেখতে পারে কোনও রকমের কোনও থ্রেট আছে কিনা। এবং আমাদের পার্টনারদেরকে যেন মনিটরিং করতে পারি, সে বিষয়ে তারা আমাদের সাজেশন দিয়েছে।

এনআইডি মহাপরিচালক আরও বলেন, আমি হ্যাক কথাটা বলিনি। কিছুটা লিকেজ হয়েছে। হ্যাক হলে ডাটা লস হওয়ার কথা। প্রযুক্তিবিদরা আমাদের ডিজাস্টার রিকভারি সিস্টেমের (ডিআরএস) কথা বলেছেন। বুধবার (১২ জুলাই) বিসিসি-র সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি। সেই চুক্তি অনুযায়ী আমাদের ডেটাগুলো আগামী মাস থেকে কালিয়াকৈর ডিআরএস-এ প্রিজারভেশনের জন্য চলে যাবে। এতে কোনও ডিজাস্টার হলে আমরা সেখান থেকে রিকভারি করতে পারবো।

পার্টনার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান চুক্তি ভঙ্গ করলে কোনও ব্যবস্থা নেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, চুক্তি ভঙ্গ যেখানে হবে, আমরা ব্যবস্থা নেবো। আইনে বিধি-বিধান আছে, কমিশনের অনুমোদন নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ডিআরএসটা হবে ব্যাকআপ। অ্যাক্টিভ ডিআরএসও আমরা করবো। এই প্রজেক্টের সময়ের মধ্যেই করবো। এতদিন ছিল না, অনেক কিছুই ছিল না। মিরর ব্যাকআপ রেখেছি আইসিটিতে, বিসিসিতে। এখন আমরা যাচ্ছি ডিআরএসএ। আমরা এতদিনও চেষ্টা করেছি।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, আমাদের সার্ভারে কোনও দুর্বলতা নেই। এটা সবাই স্বীকার করেছেন। এনআইডি নম্বর তো ব্যাংকও চাইলে পারে, এটা গোপন কিছু নয়। বেতন নেওয়ার জন্য, পাসপোর্ট করার জন্য দিতে হয়। এটা তো না পাওয়ার মতো কিছু না।

বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোসাদ্দেক হোসেন কামাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শকের প্রতিনিধি, র‌্যাবের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্টার জেনারেল, এনআইডি সার্ভারের ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি প্রধান, বুয়েট ও আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।