কিছু নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ওঠার শঙ্কা

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের মধ্যাঞ্চল এবং উজানে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে হঠাৎ করেই নদনদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তিন নদীর পানি এখন বিপদসীমার ওপরে। আরও বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে উঠে যেতে পারে যেকোনও সময়। ইতোমধ্যে কক্সবাজার, ফেনী, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান জেলার নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। আরও কয়েকটি জেলা বন্যা কবলিত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

তারা জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদনদীর শাখা ও উপনদীগুলোর পানি বাড়ছে। একইসঙ্গে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে মুহুরী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে উঠতে শুরু করেছে। তবে গঙ্গা-পদ্মার সঙ্গে সংযুক্ত নদীগুলোর পানি স্থিতিশীল আছে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে ওই সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদনদীগুলো, যেমন– সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, সারিগোয়াইন, ঝালুখালি, ভোগাই-কংশ, সোমেশ্বরী, যদুকাটা নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে।

এছাড়া আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য অববাহিকা ও উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এই সময় এ অঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের (মুহুরী, ফেনী, হালদা, কর্ণফলী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী) পানি সমতলে বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবন জেলার নদীগুলোর মধ্যে মুহুরী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে অবস্থান করে নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

নদনদীর অবস্থার বিষয়ে কেন্দ্র জানায়, তাদের মোট ১০৯টি স্টেশনের মধ্যে ৬৯টি স্টেশনের পানি বেড়েছে, কমেছে ৩৮টির, অপরিবর্তিত আছে ২টি স্টেশনের পানি। এদিকে বিপদসীমার ওপরে উঠেছে ৫টি স্টেশনের পানি।

গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সুনামগঞ্জের মহেশখোলায়, ২৮৯ মিলিমিটার। এছাড়া বান্দরবানের লামায় ২২৭, চট্টগ্রামে ২০৫, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৮০, চট্টগ্রামের রামগড়ে ১৬০, রাঙ্গামাটিতে ১৫৭, ফেনীর পরশুরামে ১৪২, কুমিল্লায় ১৩০, জাফলংয়ে ১০৩ এবং হবিগঞ্জের চাঁদপুর বাগানে ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২৪০, আগরতলায় ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।