টরন্টোতে ‘মুজিব: দ্য মেকিং অব আ নেশন’ সিনেমার প্রথম প্রদর্শনী

বহু প্রতীক্ষিত ‘মুজিব: দ্য মেকিং অব আ নেশন’ চলচ্চিত্রের প্রথম প্রদর্শনী হলো কানাডার বিশ্বখ্যাত টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। কানাডার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে, বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৬টা ‘বেললাইট বক্স সিনেমা ৭’ প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনভিত্তিক এ সিনেমার প্রথম শো'তে যোগ দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খলিলুর রহমান, বঙ্গবন্ধুর চরিত্রাভিনেতা আরেফিন শুভ, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার চরিত্রাভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া, ভারত থেকে আগত চিত্রনাট্যকার অতুল তেওয়ারি এ সময় তাদের অনুভূতি জানান। বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, যুগ্ম সচিব কাউসার আহমেদ, উৎসব কর্মকর্তারাসহ দেশি-বিদেশি দর্শকরা প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন।

৪৮তম টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সপ্তম দিনে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় ভারতের শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত ‘মুজিব-দ্য মেকিং অব আ নেশন’ (মুজিব: একটি জাতির রূপকার) প্রদর্শনীর আগে সিনেমার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘বাঙালিদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যে অদম্য সংগ্রাম, জাতির জন্য যে ত্যাগ—এই সিনেমার মাধ্যমে সেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কীভাবে একটি জাতির রূপকার হলেন, এই সিনেমার মাধ্যমে তাও নতুন প্রজন্ম জানবে, বিশ্ববাসী জানবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে নতুন প্রজন্ম জানে না কীভাবে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, বঙ্গবন্ধু কীভাবে ঘুমন্ত বাঙালি জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত করেন, প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছেন, নতুন প্রজন্ম সেভাবে তা জানে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এমনকি ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড কীভাবে সংঘটিত হয়েছিল, সেটি যারা করেছে, তারা জানে। আর দু-একজন যারা কোনও না কোনোভাবে রক্ষা পেয়েছিল, তারা সাক্ষী হয়ে আছে, অন্যরা জানে না। সেই মর্মান্তিক ঘটনাও এই সিনেমায় চিত্রায়িত করা হয়েছে। যদিও সেটি দেখা অত্যন্ত কষ্টকর। খুনিরা যে কী রকম নির্মম পাষাণ ছিল, সিনেমাতে সেটি প্রদর্শন করা হয়েছে।’

সিনেমার মুক্তির বিষয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বায়োপিকটি ইতোমধ্যে সেন্সর সার্টিফিকেট পেয়েছে। আগামী মাসে অর্থাৎ অক্টোবরে এটি দেশে মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে।’

পরিচালক শাম বেনেগালের পক্ষে চিত্রনাট্যকার অতুল তেওয়ারি জানান, প্রাথমিকভাবে বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবিটি মুক্তি পাবে এবং বিশ্বব্যাপী আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। প্রদর্শনী শেষে প্রবাসী বাঙালি এবং বিভিন্ন দেশের দর্শকরা সিনেমার নির্মাণশৈলীর প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের ৬০ ভাগ ও ভারতের ৪০ ভাগ অর্থ ব্যয়ে নির্মিত এই বায়োপিকের শুটিং ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাই ফিল্ম সিটিতে শুরু হয়ে ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে শেষ হয়। গত বছর ২০২২ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে চলচ্চিত্রটির প্রথম পোস্টার, ৩ মে দ্বিতীয় পোস্টার এবং ১৯ মে ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটির ট্রেলার রিলিজ হয়েছিল।