‘পর্যবেক্ষক হিসেবে আসতে কোনও দেশ বা সংস্থাকে নিষেধ করা হয়নি’

সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে আসতে কোনও দেশ বা সংস্থাকে নির্বাচন কমিশন নিষেধ করেনি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। পর্যবেক্ষক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলেও তারা খুশি বলে তিনি জানান। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

‘আপনার ভাষ্য অনুযায়ী ইইউ কোনও দেশ নয়। তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা আমেরিকা যদি না আসে, তাহলে আপনাদের কিছু যায়-আসে না, বিষয়টি এমন?’-এই প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘এটা আমরা বলি না। ইইউ যে আসবে না, তাতো তারা বলেনি। তারা হয়তো বলেছে বড় পরিসরে বা ছোট পরিসরে..। মিডিয়াতে আমরা যেটা দেখেছি সেটা হচ্ছে এখনও তিন মাস, সাড়ে তিন মাসের মতো সময় আছে নির্বাচনের। অনেক লম্বা সময়। দুই নম্বর হলো যে আমেরিকা আসবে না সেটি তো বলেনি। আমেরিকা আসলে অবশ্যই আমরা তো খুশি। আমরা তো কাউকে নিষেধ করিনি। আমরা বলেছি আমাদের যে নীতিমালা, আমাদের যে আহ্বান, আমরা তো বলেছি সবাই আসেন। যে সমস্ত যোগ্যতার প্রয়োজন, যে সমস্ত শর্ত আছে, সেগুলো পূরণ করলে সবাই আসতে পারবে।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আর বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন তো একটি সংস্থা। পৃথিবীতে তো আরও অনেক দেশ আছে। ইউরোপে অনেক দেশ আছে, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়ায় অনেক দেশ আছে, সার্কভুক্ত দেশ আছে। এসব দেশ থেকে আসতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বলেছে পূর্ণাঙ্গ না, ছোট পরিসরে আসতে পারে। পরবর্তীতে হয়তো তারা মনেও করতে পারে বড় পরিসরে আসবো। এটি তো চূড়ান্ত কোনেও কথা না।’

তিনি বলেন, ‘বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী যে কোনও দেশের যে কোনও সংস্থা আমাদের কাছে আবেদন করতে পারে। তারা আমাদের কাছে আবেদন করলে এবং আমরা অনুমোদন দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিলে তারা চলে আসে।’

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ফেমবোসা (সার্কভুক্ত দেশের নির্বাচন কমিশনের সমন্বয়ে গঠিত সংস্থা) সদস্যদের দেশ বিশেষ করে আমাদের আশপাশের যেসব দেশ আছে তাদের আমরা ইনভাইট করি। আমরা শিগগিরই তাদের ইনভাইট জানাবো। সার্কভুক্ত দেশগুলো (আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা) আমন্ত্রণ জানানো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে। ’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিদেশি পর্যবেক্ষকদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে ভালো হয়। আমরা চাই দেশি বিদেশি বেশি সংখ্যক পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করুক। আমরা তো আশা করি বিদেশি পর্যবেক্ষেকরা আসবেন।’

সম্প্রতি ইইউ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক টিম পাঠাবে না। সিইসি চিঠির জবাবে ইইউকে আশ্বাস দিয়েছে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। একই সঙ্গে এজন্য প্রয়োজনী সব সহায়তা সরকারের কাছ থেকে আদায় করেন নেবেন। সরকারও ইতোপূর্বে চাহিদা মোতাবেক সব সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া বারবার সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করছে।

সিইসি তার চিঠিতে সংসদ নির্বাচনে কমিশনের প্রচেষ্টাকে সমর্থন ও সহায়তা করার জন্য ইইউ-এর প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী নভেম্বরের প্রথমার্থে তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন- অভিজ্ঞতা না থাকলে অনুমতি পাবে না বিদেশি পর্যবেক্ষক