মামলা মাত্র শুরু, আরও হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

রাজধানীতে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা সমাবেশের দিন সংঘটিত সহিংসতায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পল্টন থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘মামলা মাত্র শুরু হয়েছে। আরও মামলা হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তারা সবাই মামলা করবে। কত জন গ্রেফতার হয়েছে, সেটা এখনই বলতে পারছি না। পরে জানাবো।‘

রবিবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

শনিবার বিএনপির সমাবেশে সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশের জন্য ১০ লাখ মানুষকে ঢাকায় আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে সেটার নিষেধ ছিল, তারা (বিএনপি নেতারা) শোনেনি সেসব কথা। তারা পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছিলেন— সহিংসতা করবে না এটা । কিন্তু খুবই দুঃখের বিষয় তাদের লোকজন নিরীহ মানুষের ওপর মারমুখী হয়েছে, পুলিশের ওপর চড়াও হয়েছে।’

প্রধান বিচারপতির বাসায় গেট ভেঙে ঢুকে যাওয়া নজিরবিহীন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম থেকেই পুলিশ ধৈর্যের সঙ্গে সব মোকাবিলা করেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা ভাঙচুর করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে পুরো এলাকায়। তারা পকেটে করে ইটপাটকেল নিয়ে এসেছিল; যা গুলতির মতো করে ছুড়েছে। পুলিশ সেগুলো বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের ওপর আঘাত করেছে; যা বর্বরোচিত হামলা।’

‘বিএনপির হামলা গাজার কথা মনে করিয়ে দেয়’

বিএনপি পুলিশের হাসপাতালেও তারা আগুন দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘উগ্র বিএনপি কর্মীদের এসব বর্বরোচিত হামলা গাজার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। বিএনপি এসব হামলা ২০১৪ সালের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ১০টির বেশি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতেও আগুন দিয়েছে; যা জঘন্যতম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল অভিযোগ করেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত হলো দেশের মানুষ, মারা গেলো পুলিশ। এখন আবার তারাই উল্টো হরতাল ডেকেছে। প্রতিবাদ করার কথা আমাদের, তারা এখন উল্টো প্রতিবাদ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা হয়েছে, এতে মামলা তো হবেই। যারা গাড়ি পুড়িয়েছেন তাদের নামে মামলা হবে। পুলিশ হাসপাতালে হামলার জন্য মামলা হবে। পুলিশকে পিটিয়ে মেরেছে সেটার জন্য মামলা হবে।’

‘মির্জা ফখরুলরা দায় এড়াতে পারেন না’

সহিংসতার ঘট্নায় বিএনপির শীর্ষ নেতারা দায় এড়াতে পারেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলরা যখন মিটিং করছিলেন, এই দায় কি তারা এড়াতে পারবেন। পুলিশকে যে পিটিয়ে মেরেছে, সে ছাত্রদলের; সেটা শনাক্ত হয়েছে।’ আর যেন সহিংসতা না হয়, সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘তারা নাশকতা করবে, এমন গোয়েন্দা রিপোর্ট আমাদের কাছে ছিল। কিন্তু মানুষ পুড়িয়ে মারবে, এটা কি করে ভাববো আমরা।’

বিএনপির কার্যালয়ে এক আগন্তুকের সংবাদ সম্মেলন প্রসঙ্গেও কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে একজন এসে তাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছে। এখানে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। পররাষ্ট্রনীতি মেনে কি তারা এটা করেছে, এটাও প্রশ্ন!’