মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরাই ফিলিস্তিনে চলা গণহত্যার সমর্থক: মেনন

ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে মন্তব্য করে সমস্ত পৃথিবীকে এর বিরুদ্ধে এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো এখনও পর্যন্ত নিশ্চুপ বা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে। ফিলিস্তিনের প্রশ্নে দ্বিধার কোনও জায়গা নেই। আমাদের সামনে একটি সমাধান তা হলো ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণ করা এবং ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানায় ফিরে যাওয়া। সংসদের তরফ থেকে অবশ্যই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন জানাবো।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) সংসদে উত্থাপিত ১৪৭ বিধির সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর হামলায় জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব তোলেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

রাশেদ খান মেনন বলেন, গাজায় ৮ হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার শিশু রয়েছে। আজকের পত্রিকায় দেখলাম পশ্চিম তীরে ১৪৩ জন নিহত হয়েছে। সেখানে প্রতিনিয়ত শরণার্থী শিবির ও গ্রামগুলো থেকে ফিলিস্তিনের উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

বাম রাজনীতিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মেনন বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আমাদের বিরোধিতা করেছিল তারাই আজকে ফিলিস্তিনের ওপর এই আক্রমণে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। জো বাইডেন ইতোমধ্যে ঘোষণা করছে হামাস এবং রাশিয়াকে জিততে দেওয়া যাবে না। মানবতা যেখানে ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে, সমস্ত বিশ্ব যেখানে সোচ্চার হয়েছে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) তা স্বীকার করতে রাজি নয়। আইসিসি (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) যেখানে ইউক্রেন যুদ্ধের সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্টে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে শিশুদের স্থানচ্যুত করার জন্য। সেখানে হাসপাতালের ওপরও বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। অসংখ্য শিশু নিহত হচ্ছে— কিন্তু আইসিসি কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

তিনি বলেন, গাজায় যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা কেবল গণহত্যা নয়। এটা চরম যুদ্ধাপরাধ। এই যুদ্ধাপরাধ আমার দেশে একসময়ে ঘটেছিল। আজকের পৃথিবীর মানুষকে এই যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। তাদের শাস্তি দিতে হবে।

রাশেদ খান বলেন, আমরা দেখছি পশ্চিমা বিশ্বের সব দেশ এই যুদ্ধ যেন বিস্তৃত হতে না পারে এবং ফিলিস্তিনের মানুষ বিজয় অর্জন করতে না পারে তার জন্য ভূমধ্যসাগরে রণতরী পাঠাচ্ছে।

এই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে সমস্ত পৃথিবীকে এগিয়ে আসতে হবে। মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো এখনও পর্যন্ত নিশ্চুপ বা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে। ফিলিস্তিনের প্রশ্নে আমার হয় হ্যাঁ বলতে হবে না হয় না বলতে হবে। এখানে দ্বিধার কোনও জায়গা নেই। আমাদের সামনে একটি তা হলো ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণ করা এবং ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানায় ফিরে যাওয়া। সংসদের তরফ থেকে অবশ্যই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন জানাবো।