অস্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করলে শ্রমিকদেরই ক্ষতি: প্রধানমন্ত্রী

পোশাক শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অন্যের কথায় নেচে কারখানায় হামলা করে, কারখানা ভেঙে, সেখানে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশের ক্ষতি করলে, নিজেরই ক্ষতি হবে। আর কারখানা বন্ধ করলে ওই গ্রামেই ফিরে যেতে হবে। বিনা কাজে জীবনযাপন করতে হবে।

মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর আরামবাগে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে পোশাকশ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরপর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরেও বেতন বাড়ানো হয়েছে। যে কারখানা আপনাদের রুটি-রুজি দেয়, শ্রম দিয়ে পয়সা কামাই করেন, সেই কারখানা ভাঙচুর করলে আল্লাহও নারাজ হবে। আপনাদের যা প্রয়োজন হয়, অসুবিধা আমরা দেখি।’

এ সময় কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন তো কিছু করেনি। যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকারই। আওয়ামী লীগ জানে মানুষের কষ্ট দূর করতে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘মজুরি কমিশন বসেছে। ধৈর্য ধরতে হবে। কারা উসকানি দিচ্ছে সেটা আমরা জানি। যার ভাঙচুরে জড়িত, বিএনপির নেতাকর্মীদের বলবো— হুকুমদাতা দেশেই থাকুক বিদেশেই থাকুক, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আর ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ গ্রহণ করে হুকুমজারি করে, ওই বিদেশ থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে শাস্তি দেবো, ওই কুলাঙ্গারকে। কেউ ছাড়া পাবে না।’

দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত যেন দেশের মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারতে না পারে, অত্যাচার করতে না পারে, তার জন্য সজাগ থাকতে হবে।’

মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন শেষে দলীয় জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: ফোকাস বাংলাতিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সেটা আমরা ঠিক করে দেবো। যাকে মনোনয়ন দেবো, ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে। যেন আবার আমরা এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি। এখনও অনেক উন্নয়নের কাজ বাকি, সেগুলো যেন সম্পন্ন করতে পারি। কারণ ওই সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদীরা আসলে এ দেশকে টিকতে দেবে না। সেই জন্য জনগণের স্বার্থে, কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং নৌকা মার্কাই পারে স্বাধীনতা ও উন্নয়ন দিতে।’

ঢাকাবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েছি বলেই আজকে এত উন্নতি হচ্ছে। সেই কথাটা যেন তারা মনে রাখে। সেটা মনে রেখেই… আগামী নির্বাচনের তফসিল যেকোনও সময় ঘোষণা হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে, যাকেই প্রার্থী করি— সেটা কানা, খোড়া যেই হোক, তাকে নৌকায় মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। করবেন কিনা হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় উপস্থিত জনতা হাত নেড়ে সমর্থন জানায়। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার নৌকা জিতবে। এ দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়, সেটাই চাই। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, এবার জিতবে নৌকা স্লোগান দেন।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন— আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ খোকন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

যৌথভাবে জনসভা সঞ্চালনা করেন— ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ প্রমুখ।