প্রথম দিনে ৪৩ প্রার্থীর আপিল

প্রার্থিতা ফিরে পেতে রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) প্রথম দিনে আপিল করেছেন মনোনয়ন বাতিল হওয়া ৪৩ প্রার্থী।

এর মধ্যে বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব ও বর্তমান সংসদ সদস্য মাহী বি চৌধুরী ও কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানও রয়েছেন। এ ছাড়া অনেক প্রার্থী ও তাদের প্রতিনিধিরা প্রথম দিনে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) গিয়ে আপিল সংক্রান্ত নিয়মকানুন সরেজমিনে জেনে এসেছেন। এর মধ্যে পাবনা-২ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনীও রয়েছেন।

বিকালে নির্বাচন ভবনে আপিল শেষে নাসিরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। তবে কার ষড়যন্ত্রের শিকার তা বলবো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন অফিস থেকে বলছে হলফনামায় নাকি ত্রুটি আছে। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে যে কাগজপত্র জমা দিতে হয়, তা জমা দিয়েছি। একই সিস্টেমে জাতীয় নির্বাচনে কাগজ জমা দিয়েছি। কিন্তু উপজেলায় সেটা কীভাবে এলাউ করলো? আমি তো চার বছর ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান।’

আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাবেন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, ‘এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বর্তমান সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর জামানতও থাকবে না।’

ইসি সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ২ হাজার ৭১৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। তার মধ্যে ৭৩১ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বাকি ১ হাজার ৯৮৫ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ৪২৩ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাকি ৩০৮ জন রাজনৈতিক দল মনোনীত। মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের জন্য নির্বাচন কমিশনে ১০টি অঞ্চলের ১০টি বুথ স্থাপন করে আপিল আবেদন গ্রহণ করা হয়, যা ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। আপিল শুনানি হবে ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ওই সময় সিইসিসহ পুরো কমিশন বসে আপিল নিষ্পত্তি করবে।

সূত্র জানায়, প্রথম দিনে ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচ জন, ঢাকা অঞ্চলের ছয় জন, বরিশাল অঞ্চলের দুজন, ময়মনসিংহ অঞ্চলের ছয় জন, খুলনা অঞ্চলের আট জন, কুমিল্লা অঞ্চলে দুজন, রংপুর অঞ্চলে দুজন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ছয় জন ও সিলেট অঞ্চলের একজনসহ ৪৩ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন।

সূত্র আরও জানায়, ত্রুটিপূর্ণ স্বাক্ষর, হলফনামা, ঋণখেলাপি, আয়কর রিটার্ন, গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেশির ভাগই ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরজনিত সমস্যায় মনোনয়ন বাতিল হয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল মঙ্গলবার বিকালে আপিলের বুথগুলো পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের রিটার্নিং অফিসাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে নেন। কিছু প্রত্যাখ্যান করেন। যারা প্রত্যাখ্যাত হন, যাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়, দুটোর বিরুদ্ধেই আপিল করা যায়।

সিইসি বলেন, আপিল করার জন্য ১০টা অঞ্চল ঠিক করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলভিত্তিক আপিল করা হবে। কর্মকর্তারা চমৎকারভাবে আপিল আবেদনগুলো গ্রহণ করছেন। এগুলো শুনানিতে দাখিল করা হবে। শুনানি হবে ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আমরা পুরো কমিশন আপিলগুলো শুনে সিদ্ধান্ত দেবো।