হেভিওয়েট-লাইটওয়েট বলে কেউ নেই, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা: আনিছুর

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার সময় সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেছেন, এর মধ্যে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক মারা গিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। বিধি লঙ্ঘন করলে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। হেভিওয়েট-লাইটওয়েট বলে কেউ নেই। অভিযোগ পেলেই প্রার্থিতা বাতিলের মতো কঠোর সিদ্ধান্তে চলে যাবো আমরা।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে তিন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান ইসিতে বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ইসি আনিছুর।

আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ও নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা ঢাকার বাইরে অনুষ্ঠানে রয়েছেন।

আনিছুর রহমান বলেন, প্রার্থিতা বাতিল হবে, কোনও না কোনও জায়গায় কারও না কারও বিষয়ে এইটুকু আভাস আমি দিয়ে রাখলাম।

স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কেন মাঠর দাঁড়াতে পারছেন না, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা কেন আচরণবিধি মানছেন না, এমন অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্য বিভিন্ন জেলায় ঘুরে এসেছি। আচরণবিধি বাস্তবায়ন হচ্ছে। আজও আমরা কিছু কঠোর সিদ্ধান্তের আলোচনা করেছি। আরও কিছু তথ্য চেয়েছি। আগামীকাল আরও কিছু তথ্য পেলে কঠোর সিদ্ধান্তে চলে যাবো আমরা।

তিনি জানান, আমরা কঠোর সিদ্ধান্তে চলে যাবো। কোনও রকম ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বড়-ছোট সবাইকে একইভাবে দেখছি। সে ক্ষেত্রে আমরা নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাঠে নিরপেক্ষ অবস্থান আছে। কোনও শঙ্কা, ভয়ভীতি বা আনুকূল্য নেই। আমাদের চরম নিরপেক্ষতার জন্য কেউই রেহাই পাবেন না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার করে যাবো।

একজনের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, শুনলাম সকালবেলায় তিনি (প্রার্থীর সমর্থক) তার বাড়ি থেকে কোনও একটা জায়গায় যাচ্ছিলেন। পথে তাকে আক্রমণ করা হয়েছে। তারা উভয়েই একই বংশের, তাদের মধ্যে আত্মীয়তা রয়েছে। কিছুদিন আগেও তাদের মধ্যে একটা ঘটনা ঘটেছিল। সে কারণেই হয়েছে, নাকি নির্বাচনের কারণে হয়েছে, এই বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। নির্বাচনের কারণে অনেকে ব্যক্তিগত শত্রুতার বিষয়টিও সামনে আনছে। আমরা নিরপেক্ষতার সঙ্গেই দেখবো। এভাবে যে কারও মৃত্যুই অনাকাঙ্ক্ষিত। একটা মৃত্যুও আমরা চাই না। এ জন্য যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছি। একটু সময় দেন। বাকিটা আপনারা দেখবেন।

ভোট প্রতিহতকারীদের বিষয়েও কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, মাঠেও একই কথা বলেছি। কেউ ভোটে না-ও আসতে পারেন, ভোট না-ও দিতে পারেন। কিন্তু ভোট প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই। অন্যকে প্রতিহত করলে আমরা এবার সংশোধনী এনেছি যে সাত বছর পর্যন্ত জেল বা অর্থদণ্ড করা হবে। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটকে আমরা বলেছি যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। কাজেই কোনও ব্যত্যয় হবে না।

পক্ষপাত করলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে আনিছুর বলেন, দায়িত্বে অবহেলা হলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকেই আমরা ছাড় দেবো না।

তার মতে, শোডাউন করতে পারবে না কেউ। উৎসবমুখর ভোট থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের কাছে হেভিওয়েট বা লাইটওয়েট বলে কেউ নেই। যার বিরুদ্ধ অভিযোগ আসবে, তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।