বাংলাদেশ খুব ভঙ্গুর পরিস্থিতি বা বিপদের মধ্যে আছে বলে মনে করেন না পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সোমবার (১ জানুয়ারি) বছরের প্রথম দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা যে খুব ভঙ্গুর বা বিপদে পড়ে গেছি – বিষয়টি সেরকম নয়। আমাদের সাবধানে চলতে হবে। আমরা যদি বিচক্ষণ সামষ্ঠিক অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করি, তাহলে আমার মনে হয় না যে আমাদের খুব একটা শঙ্কার কিছু আছে।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এই শঙ্কাগুলো আমরা অনেক সময় নিজেরাই তৈরি করি। অনেক সময়ে আমরা দেখি যে বাজারে একদিনের মধ্যে আলু বা কাঁচামরিচের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আমি অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে জানি যে যখন চাহিদা অসম্ভব বেড়ে যায় এবং যোগান একই রকম থাকে তখন দাম দ্বিগুণ হতে পারে। কিন্তু আমরা কি একদিনে আলু বা কাঁচামরিচ খাওয়া দ্বিগুণ করেছি? নিশ্চয়ই করি নাই। সুতরাং এখানে অনেক জল্পনা আছে এবং শঙ্কা সৃষ্টি করে জিনিসের দাম বাড়ানোর প্রবৃত্তি – সেটিতো আমরা দেখেছি। এগুলোর বিষয়ে আমাদের নজরদারি বাড়াতে হবে। এছাড়া যারা এসব করেন, তারা সমাজের অংশ। তাদের আরও দায়িত্বশীল ব্যবহার করতে হবে।’
বাজার ও সুশাসনের মধ্যে ঘাটতি আছে – এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলার এখতিয়ার আমার নাই। যাদের আছে, আমি নিশ্চিত, তারা এ বিষয়ে পূর্ণ অবগত আছে।’
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকবেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব যিনি পাবেন – তারাই দিকনির্দেশনা দেবেন। আমরা সরকারি আমলা হিসেবে তাদের নতুন ধারণা, পরামর্শ দেবো। কিন্তু সবশেষে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত তাদেরই দিতে হবে এবং সেটি দেওয়ার জন্য যোগ্য মন্ত্রীরা আসেন, যারা বিষয়টি জানেন এবং যাদের জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এবং জনগণ কী চায় সেটি বুঝতে পারেন।’
যুক্তরাষ্ট্র তাদের শ্রমনীতি ঘোষণ করেছে, এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য বিষয়ে শঙ্কার সঙ্গে নির্বাচনের সরাসরি সম্পর্কে আছে, বিষয়টি সেরকম নয়। আমাদের শ্রমিকদের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়ে আমরা নিজেরাই স্পর্শকাতর আছি। এখানে শিশুশ্রমের বিষয়টি আছে এবং আমরা নিজেরাই অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি এবং আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।’
নতুন সরকার আসার পরে সামষ্ঠিক অর্থনীতির যে বিষয়গুলো আছে, স্থিতিশীলতার যে ইস্যুগুলো আছে যেমন মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মুদ্রা বিনিময় হার – এ ধরনের নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনা রয়েছে, এসব বিষয়ে নতুন সরকার আসার পর যিনি অর্থমন্ত্রী হবেন তিনি গভীরভাবে সেগুলো দেখবেন বলে মোমেন উল্লেখ করেন।