নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে: বইমেলায় এসে আক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর

বইমেলায় আসতে পেরে ‘খুব আনন্দিত’ হওয়ার অনুভূতি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে আক্ষেপও ফুটে ওঠে তার কথায়। প্রাণের এই মেলার এই উচ্ছ্বাসে আগের মতো আর মিশে যেতে পারেন না, সে কথার উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা বেষ্টনীর ঘেরাটোপে এভাবে মেলায় আসার কোনও মজা নেই। কারণ নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে। এখানে আসলে মনে পড়ে সেই ছোটবেলার কথা, স্কুল জীবনের কথা। এমনকি ’৮১ সালে দেশে ফিরতে পারার পর থেকে আমি প্রতিবারই আসতাম। এই প্রাঙ্গণের সঙ্গে আমি এত ওতপ্রোতভাবে জড়িত, যেখানে এখন আর সেই স্বাধীনতাটা নেই। জানি না কবে আবার স্বাধীনতাটা পাবো! তবুও মানুষের জন্য যদি কাজ করতে পারি, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, দারিদ্র্য বিমোচন করে মানুষকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ উপহার দেওয়া- সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা অনেক দূর এগিয়েও ছিলাম। করোনার কারণে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এরপর এখন আবার এসেছে ফিলিস্তিনের ওপর আক্রমণ। এইসব কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং অর্থনৈতিক চাপ রয়ে গেছে সব জায়গায়। তার থেকে বাংলাদেশও দূরে নয়। তারপরেও আমরা আমাদের দেশটাকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি এবং এগিয়ে যাব। ইনশাআল্লাহ এই বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ, সেভাবেই আমরাই দেশকে গড়ে তুলবো। আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধি পাবে। এখন জেলায় জেলায় বইমেলা হচ্ছে পর্যায়ক্রমিকভাবে আমরা আমাদের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত বইমেলা নিয়ে যাব। যেটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

কোমলমতি শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, বই পড়ার অভ্যাসটা সকলের থাকা উচিত। এটা বাবা মা যদি ছোটবেলা থেকে শেখায় তাহলেই কিন্তু এই বই পড়ার অভ্যাসটা হবে।

অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ’৯৬ থেকে ২০০১ পরবর্তী মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে না পারায় বিভিন্ন দেশের মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও চর্চার পাদপিঠ হয়ে ওঠা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের নির্মাণ কাজ যে খালেদা জিয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন- সে কথারও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয়বার যখন আমি সরকারে আসি, সেটা প্রতিষ্ঠা করি। এখন সেখানে সারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে, চর্চা হচ্ছে, অনেক ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে সেখানে জানা যায়। এটা যেন আরও সমৃদ্ধ হয়, সেটা আমি চাই।

অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

তিনি তার সরকারের অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’এর স্বীকৃতি এনে দেওয়ায় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচেষ্টায় কানাডা প্রবাসী রফিক এবং সালামসহ ‘ভালোবাসি মাতৃভাষা’ নামের সংগঠনের অবদানের কথাও স্মরণ করেন। সূত্র: বাসস।