সৌদিতে সার কারখানা করবে বাংলাদেশ

সৌদি আরবে ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে দেশটি। দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সারের নিরবচ্ছিন্ন চাহিদা পূরণে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দুই দেশের যৌথ মালিকানায় এই কারখানা স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

সম্প্রতি সৌদি আরবে সফরে যান প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। রিয়াদে ৩ ফেব্রুয়ারি ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেরোরিজম কোয়ালিশনে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন সালমান এফ রহমান। সভায় জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সমন্বিত করণীয় বিষয়ে সদস্য দেশগুলোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও সৌদি আরবে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সে দেশের জ্বালানিমন্ত্রী, বিনিয়োগমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

সৌদি সফরের বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা সৌদি আরবকে প্রস্তাব করেছিলাম বাংলাদেশ ও সৌদির যৌথ মালিকানায় সে দেশে ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপন করতে। সৌদি আরব এই কারখানায় গ্যাস ও অ্যামোনিয়া সরবরাহ করবে। উৎপাদিত সার বাংলাদেশ কিনে নেবে। ইউরিয়া সার কারখানায় সরকারের পাশাপাশি দুই দেশের বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে। সৌদি আরব এ বিষয় নীতিগতভাবে সম্মতি জানিয়েছে। তারা এ বিষয়ে প্রি-ফিজিবল স্টাডি করে আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।

কেন সৌদি আরবে সার কারখানা স্থাপন করা হবে—প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশকে সার আমদানি করতে হয়, আবার সার কারখানার জন্য গ্যাসও আমদানি করতে হয়। আমাদের গ্যাসের সংকট আছে। সৌদি আরব গ্যাস সরবরাহ করবে, ফলে সেখানে কারখানা হলে আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হবে না। সার কিনতে সরকারের অতিরিক্ত ঝামেলাও হবে না।

দেশের চলমান ডলার সংকটে সৌদি আরবের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে সালমান এফ রহমান বলেন,  বর্তমানে আমরা সৌদি আরব থেকে জ্বালানিসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করি। ৪৫ দিনের ক্রেডিটে জ্বালানির মূল্য দেয় তারা। আমরা এই মুহূর্তে ডলার সংকটের বিষয়টি বিবেচনা করে ১ বছর মেয়াদে বিল পরিশোধ করার সুযোগ চেয়েছি। তারা বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সৌদি আরবকে বিশেষ বিনিয়োগ অঞ্চল দেওয়া হবে বলেও জানান সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, পায়রায় আমরা তাদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল দিতে প্রস্তাব করেছি। সৌদি আরব এ বিষয়ে আগ্রহী।

সালমান এফ রহমান বলেন, ফুড সিকিউরিটির বিষয়ে সৌদি আরব বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। মূলত তারা বাংলাদেশে সবজি, মাছ বা অন্য কোনও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করবে, পরে সেটি তাদের দেশে নিয়ে যাবে। আমরা তাদের এ প্রস্তাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছি। তারা ফিজিবিলিটি স্টাডি করে দেখবে— বাংলাদেশে কোন ক্ষেত্রে তাদের বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে গবেষণা করে  লং গ্রেড রাইস উৎপাদনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

জ্বালানি প্রতিষ্ঠান শেভরন বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলেও জানান সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, ৩০ বছর ধরে তারা বাংলাদেশে আছে। গভীর সমুদ্র এলাকায় এক্সপ্লোর করতে তারা আগ্রহী।