রোহিঙ্গারা আমাদের অর্থনীতির জন্য বড় বোঝা: দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক গত সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের কক্সবাজার উপকূলে আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দিয়েছে। আর এই উদারতা আমাদের অর্থনীতির জন্য বড় আকারের বোঝা হিসেবে পরিণত হতে বেশি সময় নেয়নি।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রতিমন্ত্রী ঢাকার গুলশানে এজ গ্যালারি বে’স এজওয়াটারে ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী "থ্রু দ্য লেন্স অফ হোপ: রোহিঙ্গা ক্রাইসিস আনফোল্ডেড" শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর এই রোহিঙ্গা খাতে আমাদের খরচ হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি টাকা। এছাড়াও শরণার্থীদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি এবং বিদেশি সাহায্য কমে আসার কারণে খরচের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এর পাশাপাশি শরণার্থীদের আগমনের কারণে স্থানীয় চাকরির বাজারেও প্রভাব পড়েছে। শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শ্রমের মূল্য কমেছে। ফলে স্থানীয় শ্রমিকদের কাজের সুযোগ কমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনও ধরণের সমাধানে না আসা পর্যন্ত এই সমস্যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত এখনও অনিশ্চিত থাকায় নানা ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যার মধ্যে মাদক ও মানবপাচারের মতো বিভিন্ন সীমান্ত অপরাধ রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান হলো নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং স্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা। আইআরসির এমন একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা এক ধরণের ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করছি, যার মাধ্যমে জাতিসংঘের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থা, ইউএসএইড এবং বিশ্বনেতারা সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট হতে পারবেন। ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি আয়োজিত এই প্রদর্শনীটি সকল দাতা সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে, যা রোহিঙ্গা জাতি এবং এই সমস্যা দ্বারা প্রভাবিত স্থানীয় জনগণের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করতে সাহায্য করবে।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, ইউএসএইড-এর মিশন ডিরেক্টর রিড জে একিলম্যান, ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি এমএস সুম্বুল রিজভি, ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটির কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিনা রহমানসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা, দূতাবাস, জাতিসংঘ, আইএনজিও এবং এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।