ঝুঁকিপূর্ণ ভবন উচ্ছেদ অভিযানে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ চুন্নুর

ঝুঁকিপূর্ণ ও অননুমোদিত ভবনগুলোতে উচ্ছেদ অভিযানে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ ‍তুললেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, এক ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে দোকান ভাঙতেছে। আরেকজন গিয়ে বলছেন, স্টপ করেন। এতে করে এলোপাথারি হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে এটা না হয় তার জন্য দায়িত্বশীলদের সমন্বিতভাবে ধীরস্থিরভাবে অতিঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে সময়ন্বহীনতার অভাবে আবারও সমস্যা হবে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সংরক্ষিত আসনের এমপি তারানা হালিমও সমন্বয়ের ওপর জোর দেন।

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানি না কিন্তু দেখলাম বিভিন্ন দফতর এত তড়িৎগতিতে...(অভিযানে গেছে)। রাজউক একদিকে যায়, গিয়ে একটি হোটেল বন্ধ করে। আবার দক্ষিণের সিটি করপোরেশন তারা যাচ্ছে এক জায়গায়। ফায়ার ব্রিগেড যাচ্ছে। একটা প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়ে গেছে। কে গিয়ে কোনটা ভাঙবে, কোনটা আটকাবে, কোনটা ধরবে, মনে হচ্ছে একটা সমন্বয়হীনতার মধ্যে চলছে। আমাদের প্রশ্ন হলো রাজউক থেকে এগুলো আগে থেকেই চিহ্নিত করা হয়েছে, কোন কোন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। কোন কোনগুলোতে আগুন লাগার আশঙ্কা রয়েছে। কে কোন সময়ে একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যারা সংশ্লিষ্ট বিভাগ তারা যদি একটা সমন্বয় করে কমিটি করে, একটা একটা করে ধরে তাহলে ভালো হয়। তিন/চারটা বিভাগ এখন তড়িৎ অ্যাকশন নিচ্ছে। তারপর কয়েকদিন পরে দেখা যাবে আর কেউ নেই। একদম নীরব-নিস্তব্ধ হয়ে যাবে।

ঢাকা শহরে ১০ হাজার ১০৬টি প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ৮টি মার্কেট অতিঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব ভবনের মালিক ও নির্মাতাদের সাথে কথা বলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করা হলে যে কোনও সময়ে আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গাউছিয়া মার্কেটে আমি গিয়েছি। ঈদের সময় হাঁটা যায় না। অটোমেটিক চলে যেতে হয়। সেখানে একটি ঘটনা ঘটলে মারাত্মক অবস্থা হয়ে যাবে।

সময়ন্বহীনতার অভাবে আবারও সমস্যা হবে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে চুন্নু বলেন, রাজউক, সিটি করপোরেশন, ফায়ার ব্রিগেড হোক...। এক ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে দোকান ভাঙতেছে, আরেকজন গিয়ে বলছেন স্টপ করেন। এতে করে এলোপাথারি হচ্ছে। যারা দায়িত্বশীল তারা সমন্বিতভাবে ধীরস্থিরভাবে অতিঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে একটি ব্যবস্থা নেন। যাতে এটা ভবিষ্যতে না হয়।

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য তারানা হালিম বলেন, পুরান ঢাকায় এ ধরনের একটি অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিগুলো সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু কার্যকরী করতে গিয়ে দেখা যায় বাসিন্দারা এ কাজে সহায়তা করে না। কাজেই বাসিন্দাদেরও চিন্তা করতে হবে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন তারাই। কাজেই এই কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিগুলো সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় বাণিজ্যিক জায়গাটা যদি সরকার নির্ধারিত হয় তাহলে ফায়ার এক্সিট বাধ্যতামূলকভাবে করা হয়। কিন্তু যত্রতত্র গড়ে ওঠা এবং যেগুলো বাসাবাড়ির জন্য তৈরি করা সেটা বাণিজ্যিক জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হয় বলেই ফায়ার এক্সিট থাকে না। তখন এই সমস্যাগুলো হয়। এজন্য আমিও অনুরোধ করতে চাই— সরকারি যে ডিপার্টমেন্টগুলো রয়েছে তারা সমন্বিতভাবে এ কাজগুলো করবে। এবং জনগণ তাতে সহায়তা করবেন। এতে তাদেরই জীবন রক্ষা পাবে।