অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট হবে ম্যানেজেবল এবং বাস্তবসম্মত, আইএমএফের অর্থ ছাড়াই আমরা ভালো করছি। তিনি বলেন, ‘এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহায়তা না পেলেও বাস্তবসম্মত বাজেট দেওয়া সম্ভব।’
রবিবার (৪ মে) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট আমাদের ইকোনমির অবস্থা জানতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছি, ইকোনমির অবস্থা আগের চেয়েও ‘বেটার’। আমাদের মাইক্রো ইকোনমিতে অনেক উন্নতি হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে অনেক সংস্কার করেছি। সবচেয়ে বড় বিষয় যেটা, সেটি হলো ‘ট্রেড’। বাণিজ্য বিষয়ে বেসরকারি খাতে একটি সামিট অনুষ্ঠিত হবে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এডিবি এখন আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করছে। এছাড়া আরও কিছু পাইপলাইনে আছে। বেসরকারি খাতের ইনভলমেন্টটা তারা চাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের ইডকল আছে, বিআইএফ আছে, আইএফসি আছে। তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মতো অভ্যন্তরীণ বিষয় বাজেট সাপোর্টের জন্য আমরা কর বাড়াচ্ছি, করের পরিধি বাড়াচ্ছি। বাজেট সাপোর্ট নিয়ে যদি আইএমএফ অযৌক্তিক কিছু শর্ত দেয়—তাহলে আমরা সেটি দেখবো। আমাদের মূল ফোকাস হলো বাজেটে খরচ কমানো, দক্ষতা বাড়ানো। আমরা তো ব্যয়ের ব্যাপারে সচেতন। প্রকল্পের বিষয়ও আমরা অনেক সাবধান। দুইটা মিলে বাজেট সাপোর্টে হই-হুল্লোড় পড়ে যাবে, বিষয়টা এমন না। আমরা যদি আইএমএফ ও এডিবি’র সাপোর্ট নাও পাই, তাও বাজেট দেবো। আমাদের প্রতিজ্ঞ যে আমরা বাজেট দেবো। ম্যানেজেবল ও বাস্তবসম্মত একটা বাজেট দেবো।
তিনি আরও বলেন, এডিবি বলছে প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগের জন্য ঢাকায় একটা ওয়ার্কশপের আয়োজন করতে।
তিনি বলেন, বাজেট সাপোর্টের বিষয়টি তারা (আইএমএফ) দেখে। সেখানে তারা মাইক্রো ইকোনমির বিষয় জানতে চেয়েছে। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি। আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে। তবে আইএমএফ বলছে, আমরা যে মাইক্রো ইকোনমিকে ভালো করছি, সেটির একটা চিঠি পেলে তারা আশ্বস্ত হতো। বলেছি আমরা সেটি দেবো। তবে এখনই না, ধীরে-সুস্থে। আমরা চট করে আইএমএফের কঠিন শর্ত মেনে নিয়ে কিছুই করবো না। আমরা আইএমএফের অর্থ ছাড়াই ভালো করছি। আমরা তো এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট নেইনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এডিবি বলেছে, অন্যান্য দেশের তুলনায় তোমাদের অর্থনীতি ভালো করছে। এ ক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী। আমাদের অর্জন নিয়ে তারা খুশি। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য আমরা চেষ্টা করছি, এটাও তারা জানে। আমরা তাদের বলেছি, গ্র্যাজুয়েশনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে এডিবি খেয়াল রাখছে। তারা আমাদের প্রকল্প সহায়তাসহ ব্যাংকিং খাত ও এনবিআরে যে সংস্কারগুলো আছে, সেগুলোতে তারা সহায়তা করবে।
আমাদের প্রকল্প সহায়তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন বাজেট সাপোর্ট। সেক্ষেত্রে এডিবিকে শর্ট টার্মে কোনও সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, বাজেট সাপোর্টের একটা বিষয়ে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। তাদের সফট ল্যান্ডিয়ের উইন্ডো ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। তবে আমরা এটাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। বাজেট সহায়তায় আমরা তাদের বলেছি ‘ওসিএফ’ ফান্ড থেকে সহায়তা করতে। কিন্তু তারা বলেছে, এ ফান্ড তো লিমিটেড। তবে আমরা (আইএমএফ) এটা দেখবো।