প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফর নিয়ে ঢাকা-টোকিও আলোচনা

বাংলাদেশ-জাপান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ষষ্ঠ দফা বৈঠক আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম এবং জাপানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রবিষয়ক সিনিয়র উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন জাপান সফরের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও খাতভিত্তিক সহযোগিতার বিষয়গুলোর পাশাপাশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়, মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিক (রোহিঙ্গা), নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। উভয় পক্ষ ২০২৪ সালের জুনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম রাউন্ডের আলোচনার পর থেকে এ পর্যন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা, ভবিষ্যতের সহযোগিতার ক্ষেত্র এবং প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন জাপান সফরের রূপরেখা তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে উভয় পক্ষ মানবসম্পদ সহযোগিতা, জ্বালানি পরিবর্তনে যৌথ ঋণ প্রদান ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ও ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য শোধনাগার, শোধনাগার সংরক্ষণ ও নিষ্কাশন সুবিধা এবং সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সহযোগিতার পাশাপাশি কৃষির যান্ত্রিকীকরণ এবং শিপইয়ার্ডগুলোর আধুনিকীকরণ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে জাপানি পক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার এবং এর সংস্কার উদ্যোগের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে এবং বলে যে, তারা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

উভয় পক্ষ রাজনৈতিক আস্থা আরও গভীর করতে, উন্নয়ন কৌশলগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে এবং ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশের অনুরোধে জাপান ইতিবাচক মনোভাব নিয়েছে। এছাড়া ফলমূল ও শাকসবজিসহ বাংলাদেশি পণ্যের বাজারে প্রবেশাধিকারের জন্য কাজ করবে। বঙ্গোপসাগরীয় উদ্যোগ (বিগ-বি) এর আওতায় জাপানি পক্ষ জানিয়েছে— উচ্চমানের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প নিশ্চিত করার জন্য জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে আরও জোরালোভাবে জড়িত থাকবে। জাপানি উৎপাদন কেন্দ্র এবং উৎপাদন সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে তাদের উৎপাদন ও শিল্পমূল্য শৃঙ্খল সম্প্রসারণ করতে উৎসাহিত করবে। মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক এবং বিগ-বি উদ্যোগের নতুন পরিকল্পনার আওতায় জাপান এ অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন দেখতে চায়।

বাংলাদেশ আরও বেশি উন্নয়ন সহায়তার জন্য সহজ শর্তে ঋণ, ঋণ পরিশোধের সময়কাল বৃদ্ধি এবং বাজেট সহায়তার জন্য জাপানের সহায়তা কামনা করেছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে জাপানি পক্ষ বলেছে, মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের (রোহিঙ্গাদের) দ্রুত সে দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জাপান তাদের প্রচেষ্টা এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।