কোস্টগার্ডের আধুনিকায়নে হেলিকপ্টার সংযুক্ত করা হবে: স্বরাষ্ট উপদেষ্টা

কোস্টগার্ডের আধুনিকায়নে সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। তিনি বলেন, সে জন্যই বোট ওয়ার্কশপ ও স্লিপওয়ে স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক হেলিকপ্টারও সংযোজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

শনিবার (১৭ মে) দুপুরে বাগেরহাটের মোংলায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের অপারেশনাল কার্যক্রম পরিদর্শন এবং নবনির্মিত বোট ওয়ার্কশপ ও স্লিপওয়ের উদ্বোধন শেষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোস্টগার্ডের সদস্যদের প্রত্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় নানা ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতে হয়। এই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ও প্রযুক্তি নির্ভর বোট ওয়ার্কশপ উদ্বোধন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এই সংযোজনের মাধ্যমে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। নবনির্মিত বোট ওয়ার্কশপ কোস্টগার্ডের পাশাপাশি মোংলা বন্দর, নৌবাহিনী, বিজিবি, নৌ পুলিশ এবং বনবিভাগের বোটগুলোতে মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে একটি প্রযুক্তি নির্ভর 'মেরামতের হাব' হিসেবে অবদান রাখবে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, কোস্টগার্ডকে একটি যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নৌ বহরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত ইনশোর পেট্রোল ভেসেল, ফ্লোটিং ক্রেন এবং টাগ বোট সংযুক্ত করা হয়েছে। কোস্টগার্ডের আধুনিকায়নে বুলেট প্রুফ হাই স্পিড বোট, সারভাইল্যান্স ড্রোন, দ্রুতগামী জাহাজ ও বোটের সংযুক্তির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যা পশ্চিম জোনেও অন্তর্ভুক্ত হবে।

তিনি বলেন, কোস্টগার্ডকে প্রযুক্তিনির্ভর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক হেলিকপ্টারও সংযোজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের জলসীমায় সার্বভৌমত্ব এবং উপকূলীয় এলাকার নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ভবিষ্যতে অধিকতর কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, অতি সম্প্রতি কোস্টগার্ড গোপনে দেশের অভ্যন্তরে পুশ-ইন করা ৭৫ জন বাংলাদেশিকে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উদ্ধার করেছে এবং পুশ-ইন প্রতিরোধে সর্বদা তৎপর রয়েছে।

তিনি বলেন, কোস্টগার্ড সদস্যরা চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সমুদ্রে অবস্থানরত থেকে জাহাজে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে জেলেদের বিনিময় কাজ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন যা তাদের পেশাদারত্বেরই প্রমাণ বহন করে।

এ সময় গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের আইনশৃঙ্খলা এবং জননিরাপত্তা রক্ষায় সদা জাগ্রত থেকে কার্যকরী ভূমিকা পালনের জন্য কোস্টগার্ড সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সুন্দরবনে জলদস্যুদের নতুন করে উৎপাত প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, জলদস্যুর উৎপাত বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে কোনও সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঘটতে দেওয়া হবে না। জলদস্যু বা বনদস্যু যে ধরনের দস্যুই থাকুক না কেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) ফয়সল হাসান জানান, অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করার জন্য খুব তাড়াতাড়ি আরও ৫টি বড় ধরনের বোট কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। যা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। তাছাড়া প্রয়োজন সাপেক্ষে অদূর ভবিষ্যতে কোস্টগার্ডের জন্য হেলিকপ্টার ক্রয় করা হবে।