প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক বৈষম্যমূলকভাবে বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার প্রতিবাদে এবং কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, ডিএস পুলের কোটা বাতিল ও সকল ক্যাডারের সমতা বিধানের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২০ মে) ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর আহ্বানে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫ ক্যাডারের সদস্যদের বিকাল ৫টা ১০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করে।
এ সময় জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির জন্য ২৫ ক্যাডারের ১২ জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য আশ্বস্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাছাড়া, সম্প্রতি কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। অথচ, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, সরকারি বিধি-বিধান ভঙ্গ করে মন্ত্রণালয়ের ভেতরে মারামারি করেছেন, মিছিল করেছেন। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোনও প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
কর্মকর্তারা বলেন, একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের গোষ্ঠী-স্বার্থে উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, ডাক, পরিবার-পরিকল্পনা, কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এ সময় আরও বলা হয়, পক্ষপাত দুষ্ট জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন 'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ'-এর সাথে কোনও রকম আলোচনা ছাড়া একটি ক্যাডারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে। এ বিষয়ে সরকারের উপদেষ্টাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা জানিয়েছিলেন যে, "এটাই চূড়ান্ত নয়, ঐকমত্য কমিশনে দাবি জানাবেন।" অন্যদিকে ঐকমত্য কমিশন নিজেরা কিছু না করে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছেন। জবাবদিহিমূলক জনবান্ধব সিভিল সার্ভিসের দাবিকে অগ্রাহ্য করে, একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বার্থে ৫৫ হাজার ক্যাডার কর্মকর্তার দাবিকে উপেক্ষা করা হলে, তা প্রত্যাখ্যান করবে পরিষদ। এসময় পরিষদের পক্ষ থেকে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় (ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার) বাস্তবায়ন, উপসচিব পদে কোটাপদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সকল ক্যাডারের সমতা বিধান ও বিভিন্ন ক্যাডারে সৃষ্ট জটিলতা দ্রুত নিরসনের আহ্বান জানানো হয়।
জবাবদিহিমূলক জনবান্ধব সিভিল প্রশাসনের দাবিতে পরিষদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে কর্মকর্তারা দৃঢ়তা প্রকাশ করেন। আগামী ২৬ মে তারিখের মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আগামী ২৭ ও ২৮ মে তারিখে অর্ধদিবস (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত) কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানানো হয়।
এর আগে, পরিষদের পক্ষ থেকে একই দাবিতে গত ২ মার্চ তারিখে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। এছাড়াও, গতবছর ২৪ ডিসেম্বর তারিখে সারাদেশে ১ ঘণ্টার কলম বিরতি কর্মসূচি ও ২৬ ডিসেম্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।