টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতি জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রকৃত টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সত্যিকারের সম্প্রীতি জরুরি। প্রকল্পকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে তুলে ধরার জন্য ‘সবুজ প্রলেপ’ বা নিয়মতান্ত্রিক কাজের মতো পরিবেশ সংরক্ষণকে দেখলে টেকসই উন্নয়ন অর্জিত হবে না। টেকসই উন্নয়নের জন্য জনসম্পৃক্ততা, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার এবং ন্যায়বিচারের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) পরিবেশ অধিদফতরের আগারগাঁও কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষ্যে ‘হারমনি উইথ নেচার অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত পরামর্শ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য শুধু চেকলিস্ট পূরণ করাই যথেষ্ট নয়। পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ (ইআইএ) (ইআইএ) প্রতিবেদনগুলো যদি মানুষের ভাষায় লেখা না হয় বা জনসাধারণের সঙ্গে শেয়ার না করা হয়, তাহলে সেগুলোর কোনও কার্যকারিতা থাকে না। জনমত শোনা যথেষ্ট নয়— তা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি বলেন, পরিবেশবিদদের সঙ্গে সরকারি সংস্থাগুলোর দূরত্ব দিনে দিনে বাড়ছে। অনেক প্রকল্প অনুমোদনের সময় পরিবেশগত দিকগুলোকে উপেক্ষা করা হয়। পরিবেশকে ‘পরবর্তীতে ভাবার বিষয়’ হিসেবে দেখা হয়— এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমি পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন সব ইআইএ প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়। জনগণের জানার অধিকার আছে। অভিযোগের জবাব দেওয়া দয়া নয়— এটা আমাদের দায়িত্ব। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, শুধু একটি মন্ত্রণালয় পরিবেশ নিয়ে কাজ করলে হবে না— সব মন্ত্রণালয়কে এই দায়িত্ব নিতে হবে। প্রশাসনিক সমন্বয় ও সংস্কার ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের পরিবেশগত অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের বায়ু, নদী ও জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে। প্রকৃতিকে উন্নয়নের কেন্দ্রে না রাখলে আমরা এগোতে পারব না।

পরামর্শ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এনডিসি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সোনালি দয়ারত্নে, খ্যাতিমান বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান এবং পরিবেশ অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. সোহরাব আলী।