বিদেশ থেকে যা ঋণ আসে পাওনা মেটাতেই চলে যায়: শিক্ষা উপদেষ্টা

বিদেশ থেকে যে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, তার বড় অংশ আগের ঋণ শোধ করতেই খরচ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘২০২৪-২৫ বাজেটে: শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বছরের পর বছর আমরা এমন সিসিফাসের মতো পরিস্থিতির মধ্যে আছি—যেখানে ঋণ পাচ্ছি, তার চেয়েও বেশি বা প্রায় সমপরিমাণ অর্থ আগের ঋণ শোধ করতেই খরচ হচ্ছে। এই চক্রের মধ্যে থেকেও শিক্ষা খাতসহ অগ্রাধিকারের জায়গাগুলোতে উচ্চ প্রভাব ফেলতে পারে এমন উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

শিক্ষা খাতের সংস্কার নিয়ে অধ্যাপক আবরার বলেন, ‘সময় এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকলেও দায়বদ্ধতার অভাব আর সঠিক পরিকল্পনার ঘাটতি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রে যে কাজ করা যেতো, তা করা যায়নি এবং তাতেই হতাশা তৈরি হয়েছে।’

শিক্ষক ও প্রশিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি, যা অতি জরুরি ছিল। নারীর কারিগরি শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যে বৈষম্য বিদ্যমান, তা সমাধান করা যায়নি। সঠিক প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে এবং স্টিগমা কমানো গেলে এই খাত থেকেও ভালো অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা আনা সম্ভব। শুধুমাত্র কমিশন গঠন করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। গ্রাসরুটস পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে শিক্ষা উপদেষ্টা

অনুষ্ঠানে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের অ্যাকাডেমির সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির একটা দূরত্ব কাটাতে ফ্রেশ গ্রাজুয়েটদের জন্য তিন মাসের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম চালু করা খুবই দরকার। এখন দেশে প্রতিবছর ২০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রয়োজন। সে মাত্রায় বাংলাদেশ ৮ থেকে ১০ লাখ করতে পারে। এভাবে চললে একসময় বাংলাদেশ বৈশ্বিক মার্কেটে পিছিয়ে পড়বে।

এছাড়া অনুষ্ঠানে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান খাতে বর্তমান বাজেটে আয়-ব্যয়ের হিসেব নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবু ইউসুফ। 

এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।