রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে করা রিট খারিজ

হাইকোর্ট

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে অন্তর্ভুক্তির বিধান নিয়ে করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

আজ সোমবার (২৮ মার্চ) এ রিটের ওপর শুনানি গ্রহণের কথা ছিল। দুপুর ২টায় বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ না করেই রিটটি খারিজ করে দেওয়ার আদেশ দেন। এ সময় আদালত বলেন, ‘এ বিষয়ে আর শুনানির প্রয়োজন নেই। আমরা এ ব্যাপারে বিস্তারিত পড়ে এসেছি। যারা শুনানির আবেদন করেছেন, তাদের আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয়।’

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রায় ২৩ বছর পর এই আবেদন শুনানির জন্য উত্থাপিত হলে শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত। পরে তা পরিবর্তন করে ২৮ মার্চ করা হয়।

১৯৮৮ সালে ৫ জুন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম জাতীয় সংসদে পাস করা হয়। সংশোধনীতে ২(এ) সংযুক্ত করে বলা হয়- ‘রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে।’

একই বছরের ৯ জুন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মধ্য দিয়ে এটা আইনে পরিণত হয়, যা সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী নামে পরিচিত। ওই বছরের আগস্টে ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটি’র পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেনসহ দেশের ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। দীর্ঘ ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ জুন হাইকোর্টে একই বিষয়ে ফের সম্পূরক আরও একটি আবেদন করে রিটের শুনানির আবেদন করা হয়। পরে ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করেন।

আদালতে থেকে বেরিয়ে রিট আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আজ দুপুরে আমরা মামলার শুনানির জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত শুনানি গ্রহণ করেনি। রিট বাতিলের বিষয়ে আপিল করবেন কিনা প্রশ্নের জবাবে সুব্রত চৌধুরী বলেন, 'রায়ের কপি হাতে পেলে এ ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।' রিট আবেদনকারীদের কেউই আজ আদালতে উপস্থিত হননি।

১৯৮৮সালে রিট আবেদন করেছিলেন লেখক সাহিত্যিক, সাবেক বিচারপতি, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তাদের মধ্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য,কবি সুফিয়া কামাল, ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদসহ দশজন মারা গেছেন।

 

/ইউআই/এসটি/এজে/