আমি কাউকে ইলিশ খেতে নিষেধ করিনি: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনাআমি কাউকে ইলিশ মাছ খেতে নিষেধ করিনি। আমি পহেলা বৈশাখ কী খাব বা আমার বাসায় কী রান্না করব শুধু সেই মেন্যুর কথা জানিয়েছি। পহেলা বৈশাখে ইলিশ মাছ খাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সমাজের তৈরি। আসুন, এই আনুষ্ঠানিকতা ভাঙার চেষ্টা করি।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে গণভবনে গেলে উপস্থিত সবার উদ্দেশে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা এ তথ্য জানান।
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা শুভেচ্ছা জানাতে গেলে জাতীয় মাছ ইলিশের প্রসঙ্গ উঠে আসে আলোচনায়। তখন প্রধানমন্ত্রী ইলিশ নিয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে প্রায় ১০ মিনিট কাটান। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক স্থপতি ইয়াফেস ওসমান শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা তার একটি স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। এ সময় তাকে বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইলিশ মাছ সুস্বাদু, সবাই খাক, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু আজকের দিনকে কেন্দ্র করে ইলিশ কেন? আজ অন্তত আমরা ইলিশ খাওয়া বয়কট করি।
এ সময় দলের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাদের অনেক নেতাকর্মী-সমর্থক তো ইলিশ মাছ আগেই কিনে রেখেছে, এখন ওগুলোর কী হবে।

আরও পড়ুন: বৈশাখী সাজে খালেদা জিয়া

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি সবার বাসার ফ্রিজে ইলিশ মাছ মজুদ করে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ আবার চাঁদপুরের ইলিশ মাছ উপহারও পেয়েছেন। আমি ইলিশ খেতে নিষেধ করিনি, পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশ খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায় কিনা তা বলেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চৈত্র মাসের শেষ দিন, অথবা ২ বৈশাখ ইলিশ মাছ খান। পহেলা বৈশাখেই কেন ইলিশ খেতে হবে? এটি কি বাঙালি সংস্কৃতির অংশ? এদিন ইলিশ খাওয়া সমাজের তৈরি করা নিয়ম। আসুন আমরা ভেঙে ফেলি সেই নিয়ম।

পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাওয়ার যে রীতি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, তা ভাঙতে আজকের দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনের খাদ্য তালিকায় ইলিশের কোনও তরকারি রাখেননি। জানা গেছে, আজ অতিথি আপ্যায়নে গণভবনে দেড়শ জনের খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে খাবার ছিল খিচুড়ি, মুরগির মাংস, ডিম ও বেগুন ভাজা। এছাড়া মিষ্টি ও দেশীয় ফলমূল, চা-কফিও ছিল।

উল্লেখ্য, ঐতিহ্যবাহী জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষার স্বার্থে নববর্ষ উদযাপনের দিন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে গণভবনের খাদ্য তালিকায় ইলিশ রাখা হবে না বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিমের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আরও পড়ুন: বর্ষবরণে কদর কমেছে পান্তা- ইলিশের

/এজে/