সকাল ১১টার দিকে ১৫ ইস্কাটনস্থ শফিক রেহমানের বাসার বাবুর্চি আলী আজম এসব তথ্য জানান। ওই বাসার তিন তলায় থাকেন শফিক রেহমান।
তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টায় হঠাৎ মাইক্রোতে করে ৩ জন বাসার সামনে এসে নামেন। আমাকে বাসার নিচ থেকে দাড়োয়ান মতিন মোল্লা জানালেন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের (বৈশাখী টিভি) সাংবাদিক আসছে। স্যারের ইন্টারভিউ নেবে। ওরা নাকি আগেও আসছিলেন।’
আরও পড়ুন- শফিক রেহমানের গ্রেফতার: নেপথ্যের কারণ হিসেবে যা মনে করে বিএনপি
আলী আজম বলেন, ‘তাদের নিচে বসতে বলে স্যারকে বিষয়টি জানাই। স্যার রিপোর্টারদের নাস্তা দিতে বলেন। তিনি ফ্রেশ হয়ে নিচে নামবেন। কিছুক্ষণ পর ওই তিন ব্যক্তি উপরে আসেন। স্যার (শফিক রেহমান) থাকেন তিন তলায়। ওরা স্যারের দেরি দেখে তাড়াহুড়া শুরু করেন। আমি বললাম, আপনারা বসেন, অস্থির হবেন না স্যার ফ্রেশ হচ্ছেন। কিন্তু তারপরও তারা দ্রুত স্যারকে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। এরপর আমি উপরে গিয়ে দেখি স্যার শেভ হচ্ছেন। নিচে নেমে আমি তাদের বলি আরও একটু সময় লাগবে। বসেন। তাদের একজন উপরে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমি থামতে বলে নিচে নেমে যাই। ম্যাডামও অসুস্থ। আমি ম্যাডামকে সহযোগিতার জন্য মালটার সরবত বানাতে যাই। তাকিয়েই দেখি স্যার নিচে নামতেছেন। ভাবলাম স্যার কিছু না খেয়ে নিচে নামতেছেন কেন? আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই একজন আমাকে ঘুষি মেরে বলেন, আমরা বৈশাখী টিভির রিপোর্টার না। আমরা ডিবির লোক। এই বলে স্যারকে নিয়ে যায়।’
বাসার গলির দাড়োয়ান মতিন মোল্লাহ বলেন, সকালে বৈশাখী টিভির রিপোর্টার পরিচয়ে তিন ব্যক্তি ভেতরে যেতে চেয়ে অনুমতি নেন। আমি উপরে জানিয়ে দিলে তারা উপরে যান।
এরপর আমি গেইটের দিকে গিয়ে দেখি আরও ৭ জন দাঁড়িয়ে। কাউকে সাংবাদিক মনে হচ্ছিল না। সাদা মাইক্রোর সামনে সবাই বসা। এরপর কিছুক্ষণ পরেই শফিক রেহমান স্যারকে নিয়ে যায় ওরা। পরে জানতে পারি ডিবি পুলিশ আসছিল, সাংবাদিক নয়।
বাসার গৃহকর্মী হনুফা বেগম বলেন, কয়েকদিন ধরে স্যার ও ম্যাডাম দুজনই অসুস্থ। স্যারের হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, রক্ত চাপ। ম্যাডামও জ্বর বমির কারণে শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল।
তিনি বলেন, ‘১৮ বছর ধরে এই বাসায় কাজ করতেছি। আগে ছিলাম বারডেমে। এভাবে ভুয়া পরিচয়ে ডিবি আইসা স্যারকে লইয়া গেলো, ভয় লাগে না জানি আবার স্যারও গুম হইয়া যায় কিনা!
হনুফা বেগম আরও জানান, সকাল ১১টা ২৪ মিনিটে ১৫ ইস্কাটনের বাসা থেকে ম্যাডাম (তালেয়া রেহমান) স্যারের সকালের খাবার ও ওষুধপত্র নিয়ে মিন্টো রোডস্থ ডিবি অফিসে গেছেন।
প্রসঙ্গত,প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রে শফিক রেহমান জড়িত থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে পুলিশ।
এআরআর/এপিএইচ/