নিহত শ্রমিকের লাশ বাড়িতে পৌঁছে দেবে পুলিশ, স্বজনরা আসেননি


গুলিতে আহত শাহীনুরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছেপরিবহন ধর্মঘট চলাকালে বুধবার পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে নিহত বাসচালক শাহিনুরের মরদেহ পুলিশের প্রহরায় গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সকালে ঢামেক হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত করা হয়।এসময় গ্রাম থেকে স্বজনদের আসার সম্ভাবনার কথা ভেবে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলেও, সেখানে নিহত এই বাসচালকের স্বজনদের দেখা যায়নি। নিহত বাসচালক শাহীনুরের (৩৭) বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবির পশ্চিম বালিঘাটা গ্রামে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে শাহিনুরের লাশ এসআই মহেশচন্দ্র সিংহের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শটগানের গুলিতেই মারা গেছেন শাহিনুর। তার সারা শরীরে ছোট ছোট বুলেট ছিল। অসংখ্য দাগে ভরা, অনেকটা ছররা গুলির মতো।’ ময়নাতদন্ত শেষে তারা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছেন বলেও জানান। ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তার অনুমান লাশটি চব্বিশ ঘণ্টা আগের হয়ে থাকতে পারে। ফ্রিজে থাকায় সঠিক সময় বলা সম্ভব হচ্ছে না।

বাসচালক শাহীনুরের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনের অনুলিপিএদিকে এসআই মহেশচন্দ্র সিংহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ময়নাতদন্ত শেষ করে আমরা লাশ লিগ্যাল গার্ডিয়ানের কাছে তুলে দিয়েছি। মর্গ থেকে জানানো হয়েছে লাশ পুলিশি প্রহরায় গ্রামে পাঠানো হবে,এমন প্রশ্নে  তিনি বলেন, ‘পুলিশ সঙ্গে যাচ্ছে।’ একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার সময় পুলিশ প্রহরা লাগছে কেন, প্রশ্নে  তিনি বলেন, ‘তা তো জানি না। তিন চারজন পুলিশ সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও চিত্রগ্রাহক সাংবাদিক মিশুক মুনীর এর নিহতের ঘটনায় এক বাসচালকের যাবজ্জীবন সাজা দেওয়ায় ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছিল। আর সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে আদালত ২৭ ফেব্রুয়ারি ট্রাকচালকের মৃত্যুদণ্ড দিলে এই ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশব্যাপী পালন করতে শুরু করে শ্রমিকরা।

গত মঙ্গলবার রাত থেকে রাজধানীর গাবতলিতে অবস্থান নেয় শ্রমিকেরা। সারারাত পুলিশ শ্রমিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় শ্রমিকরা পুলিশের গাড়িসহ বেশিকিছু স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বুধবার সকালে গুলিবিদ্ধ হন শাহিনুর।

/ইউআই/ এপিএইচ/