রেইনট্রি হোটেলে সাফাতের মানি রিসিট থেকে যা জানা গেল

রেইনট্রি হোটেলের ৭০০ নম্বর কক্ষের ভাড়া বাবদ সাফাতের নামে মানি রিসিট ২৮ মার্চ বিকাল ৪টা থেকে ২৯ মার্চ সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টায় রেইনট্রি হোটেলে ৫৯ হাজার ৫শ ৭১ টাকা খরচ করে বন্ধুদের নিয়ে বেরিয়ে আসে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ। সেদিন সাফাত আহমেদের নামে হোটেল থেকে যে মানি রিসিট তৈরি করা হয়েছিল তার কপিতে দেখা যায়,  সাফাত ঘটনার দিন ২৮ মার্চ বিকাল ৪টা ০৮ মিনিটে হোটেলের ৭০১ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেয়। পরে হোটেলে অবস্থানকালে কোনও এক সময় সে ৭০১ নম্বর কক্ষটি বদল করে ৭০০ নম্বর কক্ষে চলে যায়।

পরের দিন সকাল ১০টার পর হোটেল ছেড়ে যাওয়ার সময় তার নামে যে মানি রিসিটটি তৈরি করা হয়, সেখানে তারা কোন কোন সার্ভিস নিয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া গেছে। যদিও এর বাইরে ‘কমপ্লিমেন্টারি’ হিসেবে নানা কিছু তাদের ‘প্রোভাইড’ করা হয়েছিল বলে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশের পর থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষ বারবারই বলার চেষ্টা করছে।

গত ২৮ মার্চ রাতে রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন দুই তরুণী।ধর্ষণের অভিযোগ এনে তারা গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে দাবি করা হয়, ২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওই দুই তরুণীকে জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে রেইনট্রি নামের হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের দুজনকে ধর্ষণ করে সাফাত ও নাঈম। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে এ ঘটনা ভিডিও করানো হয় বলে এজাহারে  উল্লেখ করা হয়।

ধর্ষণ মামলার আসামি সাফাত আহমদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী রহমত আলী ওরফে আবুল কালাম আজাদকে সিলেট, ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জ থেকে থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা অভিযোগ স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রেইনট্রি হোটেলের ৭০১ নম্বর কক্ষের ভাড়া বাবদ সাফাতের নামে মানি রিসিট মি. আহমেদ সাফাতের নামে হোটেলের দেওয়া রিসিটে মদ জাতীয় দ্রব্যের কোনও উল্লেখ নেই। কারণ, ১৩ মে রেইনট্রি হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ফ্র্যাংক ফরগেট জানিয়েছিলেন,তাদের হোটেলের মদের লাইসেন্স নেই। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাইসেন্স না থাকায় মানি রিসিটে মদের উল্লেখ না থাকাই স্বাভাবিক। তবে পরবর্তীতে শুল্ক গোয়েন্দারা ওই হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে মদের বোতল উদ্ধার করে।

এদিকে, ধর্ষণে সহযোগিতার প্রমাণ পেলে রেইনট্রি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এ মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানান, রেইনট্রি হোটেলে ঘটনার দিন যারা উপস্থিত ছিল, তাদের প্রত্যেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সেদিন কার কী ভূমিকা ছিল, তাও জানার চেষ্টা করা হবে।

/ইউআই/ এপিএইচ/