চিকিৎসায় অবহেলার কারণে অকালমৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার (২৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘চিকিৎসক নয় অপরাধীদের বিচার চাই’, ‘ ৫২ থেকে আমরা আছি ন্যয়ের পথে’, ‘আজও আছি আফিয়ার সাথে’, ‘আমি অনেক কষ্টে শ্বাস নিচ্ছিলাম’, ‘কেন এলোনা কোনও ডাক্তার’, ‘ক্লিনিক্যালি ডেড, তবুও চিকিৎসক কেনও রক্ত চাইলেন’, ‘উই বিলিভ ডক্টরস আর হিউম্যান লাইক আস’ লেখা প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।
ডা. ফারহানা সীমা কোনও প্রমান ছাড়া কুৎসা রটানোর ঘটনার বিচার দাবী করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে জানানো হয়, একটি কুচক্রি মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ডাক্তার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে চাইছে। যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষকদের বাজে মন্তব্য করছেন তাদের ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে আরও বলা হয়, ডাক্তারদের সঙ্গে বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য যৌথ প্রেস ব্রিফিং করতে চাইলেও তারা (ডাক্তারা) আসেননি। তারা আমাদের বোনের মৃত্যুর ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করতে চাইলেও তা হয়নি। এটাই প্রমাণ করে তাদের গাফিলতি এবং অবহেলা রয়েছে।
প্রাণী বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, ‘ডাক্তাররা তিন ধরনের তথ্য দিয়েছে। কোনও ধরনের প্রমাণ ছাড়াই ডা. ফারহানা সীমা মৃত একজন ব্যক্তিকে নিয়ে এই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। তাকে অবশ্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার বিচারের মুখোমুখি দেখতে চায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি কুচক্রী মহল ঢাবি এবং ডাক্তারদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, আমরা জানাতে চাই- আমাদের অবস্থান অবহেলায় মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে, ডাক্তারদের বিরুদ্ধে নয়। আমরা গাফিলতি অবহেলায় জড়িতদের বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আমরা নই। আফিয়ার ক্লাস উপস্থিতি ৯৬ থেকে ৯৮ শতাংশ। আমি তার খাতা দেখলাম সবগুলো বিষয়েই সে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। ঢাবি এক সম্ভবনাময় মেধাবী শিক্ষার্থীকে হারিয়েছে। আমরা তার চিকিৎসায় অবহেলা ও গাফিলতির জন্য দায়িদের বিচার চাই। আর কোনও মেধাবী শিক্ষার্থী এভাবে যেনো প্রাণ না হারায়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদোস বলেন, ‘একজন মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে ডা. ফারহানা সীমা কোনও প্রমাণ ছাড়াই যে মন্তব্য করেছেন, তা খুবই দুঃখজনক। আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে, তার মন্তব্য মিথ্যা।’
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে জ্বর নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আফিফা জাহিন ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন ১৮ মে তার হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। যার কোনও সুস্পষ্ট কারণ জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
/এসএমএ/