‘প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ’





মুক্তামনিকে দেখতে হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিনবিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে সে এই ধন্যবাদ জানায়। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিন  মুক্তামনিকে দেখতে  হাসপাতালে গেলে সে একথা বলে। দুপুর ১২টায় লেনিন মুক্তামনির কেবিনে যান এবং তাকে বলেন, ‘আমাকে প্রধানমন্ত্রী পাঠিয়েছেন। আমি তার সঙ্গে কাজ করি। তুমি কি প্রধানমন্ত্রীর নাম জানো?’ তখন মুক্তামনি বলে, ‘জানি। ওনার নাম শেখ হাসিনা।’ ডা. জুলফিকার লেনিন তাকে বলেন, ‘তিনি তোমার চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। তুমি একদম চিন্তা করবে না। তুমি ভালো হয়ে যাবে। তোমার চিন্তার কোনও কারণ নেই।’ জবাবে মুক্তামনি বলে, ‘ওনাকে আমার ধন্যবাদ দেবেন।’  এসময় বাংলা ট্রিবিউনের এ প্রতিবেদকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলা ট্রিবিউনকে ডা. জুলফিকার লেনিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। তার সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে। হাসপাতালে মুক্তামনির সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্যদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এর বাইরে পরিবারটির একান্ত ব্যক্তিগত খরচের জন্য হাতখরচ হিসেবে মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহিম হোসেনের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাঠানো নগদ টাকাও দেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, হাতখরচের টাকাগুলো ইব্রাহিম হোসেনের হাতে দেওয়ার জন্যই প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

সম্প্রতি ‘মুক্তামনির কী অসুখ জানেন না চিকিৎসকরাও!’ এই শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউনে খবর প্রকাশের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়। এমন সংবাদ প্রকাশের পর অনেকেই এগিয়ে এসেছেন মুক্তার চিকিৎসায়। মঙ্গলবারই শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাতক্ষীরার ১১ বছরের মুক্তামনির রোগ এখনও শনাক্ত করতে পারেননি চিকিৎসকরা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট থেকে বুধবার (১২ জুলাই) জানানো হয়, মুক্তামনি চর্মরোগে আক্রান্ত। ডারমাল ভাসকুলার ম্যালফরমেশন, লিমফেটিক ম্যালফরমেশন, নিউরোফাইব্রোম্যাটোসিস, কনজেনিটাল হাইপারক্যারাটোসিস-এই চারটি চর্মরোগের মধ্যে যে কোনও একটা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছেন।

এ ব্যাপারে বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ড. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘সময় মতো যদি মেয়েটির সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে আজ এ অবস্থা হতো না। তার হাতের ফাংশন ঠিক আছে। সে হাত মুঠি করতে পারে।কিন্তু তাকে অপারেশনের উপযোগী করে তুলতে ৭-১০ দিন সময় লাগবে। তার রক্তশূন্যতা ও অপুষ্টিজনিত সমস্যা রয়েছে।

মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ৮ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। বুধবার (১২ জুলাই) তারা শিশুটিকে পর্যবেক্ষণ করেন এবং তার চিকিৎসার ব্যাপারে সম্ভাব্য মতামত জানান।

বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি আছে। তার এক হাত ফুলে গিয়ে দেহের চেয়েও ভারি হয়ে গেছে। চার বছর ধরে এই হাতের ‘বোঝা’ বয়ে বেড়াচ্ছে শিশুটি। শরীরের অসহ্য যন্ত্রণায় খেলাধুলা তো দূরের কথা, ঠিকমতো বসতেও পারে না মেয়েটি।

জেএ/এনআই/ এপিএইচ/

আরও পড়ুন: মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী