পক্ষাঘাতে সৌদি আরব ছাড়লেন মোতালেব

মোতালেবকে চেক ও বিমানের টিকেট তুলে দিচ্ছেন রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ্। ছবি-প্রতিনিধি

জীবন এমনই। কখন, কোথায়, কীভাবে থমকে যায় কেউ জানে না। ভাগ্যের শিকে অনেকেই ছিঁড়তে চান; তবে সবার কপালে তা জোটে না। আরেকটু ভালো করে বাঁচার জন্য দেশ ছেড়ে সুদূর সৌদি আরব পর্যন্ত চলে গিয়েছিলেন চাঁদপুরের আব্দুল মোতালেব মজুমদার। কিন্তু পক্ষাঘাতে (প্যারালাইসিস) আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ ৩৫ বছর প্রবাসজীবন যাপনের পর রিক্ত হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে।

সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়, রিয়াদের অলাইয়া মল সেন্টারের একটি শো’রুমে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতেন মোতালেব। কিন্তু অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তার স্পন্সর (কফিল) কোনও সাহায্য করেননি তাকে। বাধ্য হয়ে রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে আশ্রয় নেন তিনি। তারপর দূতাবাস থেকে তার বকেয়া বেতন আদায় এবং তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ্ জানান, পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার পর ভাই পরিচয়ে গফুর নামের একব্যক্তি মোতালেবকে দূতাবাসে রেখে যান। কিন্তু পরে তাকে বারবার ফোন দিলেও তিনি আর যোগাযোগ করেননি। এরপর তিন সপ্তাহ ধরে তাকে দূতাবাসে রেখে চিকিৎসা করিয়েছেন শ্রম উই্ংয়ের কর্মকর্তারা।

দেশে ফেরার জন্য মোতালেবকে দেওয়া দূতাবাসের আউট-পাশ। ছবি-প্রতিনিধি

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, মোতালেবের স্পন্সরের সাথে বৈঠক করে তার পাওনা অর্থ আদায় করা হয়েছে। কয়েকদফা বৈঠকের পর বকেয়া ১৩ হাজার ৭শ ৩ রিয়াল (২ লক্ষ ৯১ হাজার ৯শ ১১ টাকা)উদ্ধার করেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। এরপর তাকে দেশে পাঠানোর জন্য ওই অর্থসহ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিমানের টিকেট কিনে দেওয়া হয়। আউট-পাশের মাধ্যমে দেশে নিজ পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে মোতালেবকে।

এ ব্যাপারে দূতাবাসের শ্রম উইং কাউন্সেলর সারোয়ার আলম জানান, দেশে ফিরে চিকিৎসার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স ফান্ডে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে মোতালেবের। ওই আবেদনে আমরা অনুমোদন দেব। ফলে সে চিকিৎসা করার জন্য এককালীন অর্থ পাবে।

দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, মোতালেবের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার বুরচৌ গ্রামে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অবস্থানরত তার স্পন্সর কোম্পানির নাম ‘বাজার ইন্টারন্যাশনাল স্টাবলিশমেন্ট’।তার সংসারে চার সন্তানের মধ্যে তিন জনের এখনও লেখাপড়া শেষ হয়নি। বড় মেয়েকে মাস্টার্স করিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। মেজ মেয়ে এইচএসসি পড়ছে। বড় ছেলে ডিপ্লোমা করছে এবং ছোট ছেলে চাঁদপুরের আল-আমিন একাডেমির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

এএইচ/