হুইল চেয়ারে অসুস্থতার ভান, ২৫ কেজি স্বর্ণ পাচারচেষ্টা ব্যর্থ

 

হুইল চেয়ারে রোগী সেজে সোনা পাচারকালে আটক জামিল (ছবি- কাস্টম হাউস)

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে। ওই ফ্লাইটেরই যাত্রী ছিলেন তিনি। প্লেন থেকে নেমে হুইল চেয়ারে বসে পড়েন। রীতিমত রোগী সেজে অসুস্থতার ভান করেন। সন্দেহ হয় কাস্টমস কর্মকর্তাদের। শরীর তল্লাশির পর দেখা গেল, আসলে তিনি রোগী নন সোনা পাচারকারী। অসুস্থতার ভান করে সোনা পাচার করছিলেন।

জামিলের শরীরে বাঁধা এই ভেস্ট-এর ভেতরে ছিল সোনার বারগুলো(ছবি- কাস্টম হাউস)

শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২৫ কেজি সোনাসহ মো. জামিল আক্তার নামে এই যাত্রীকে আটক করেছে ঢাকা কাস্টম হাউস। বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার আহসানুল কবির।

তিনি বলেন, ‘শনিবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (এসকিউ- ৪৪৬) ঢাকায় আসেন জামিল। তিনি অসুস্থতার ভান করে হুইল চেয়ারে বসেছিলেন। সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করা হয়। পরে জামিলের শরীর তল্লাশি করা হলে ২০০ পিস সোনার বার পাওয়া যায়। ২৫ কেজি ওজনের এ সোনার আনুমানিক দাম সাড়ে ১২ কোটি টাকা। ’

জামিলের কাছ থেকে উদ্ধার করা সোনার বার(ছবি- কাস্টম হাউস)

 

আহসানুল কবির বলেন, শনিবার রাত ১০. ৩০ টায় দিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (এসকিউ- ৪৪৬) ঢাকায় আসেন জামিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগে থেকেই গ্রিন চ্যানেলে সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয় এবং গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার সময় হুইল চেয়ারে আগত সন্দেহভাজন যাত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে কাস্টমস প্রিভেন্টিভ টিম। এরপর কাস্টমস হলে নিয়ে তার শরীর তল্লাশি করা হয়। শরীরের নিম্নাঙ্গে ভেস্ট পরিহিত অবস্থায় ২৫ কেজি ওজনের ২৫০টি (প্রতি পিস- ১০০ গ্রাম) সোনার বার পাওয়া যায়। যাত্রী ২৫ কেজি ওজনের ভেস্ট শরীরের নিম্নাংশে পরে কাস্টমসের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য হুইল চেয়ারের আশ্রয় নিয়েছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে তার কাছে সোনা থাকার কথা অস্বীকার করেন। আচরণে অসংলগ্নতা দেখে পরবর্তীতে ব্যাগেজ কাউন্টারে এনে যাত্রীকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি শরীরে সোনা থাকার কথা স্বীকার করেন। দু-পায়ের মাঝে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচানো ২৫০ টি সোনার বার একটি ভেস্টের মধ্যে লুকায়িত অবস্থায় পাওয়া যায়।’
তিনি বলেন,‘জামিল আক্তারের গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরে তার চিপসের (দোকানদারি) ব্যবসা রয়েছে। তিনি একজন ফ্রিকোয়েন্ট ট্রাভেলার। গত ৬ মাসে মোট ১৩ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। ফৌজদারী মামলা দায়ের করে আসামিকে থানায় সোপর্দ করার কার্যক্রম চলছে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরে সোনা চোরাচালান উদঘাটনের এটিই সবচেয়ে বড় ঘটনা । গত বছরের আগস্ট মাসে হু্ইল চেয়ার যাত্রী আতাউল মুজিবের কাছ থেকে ২৩ কেজি সোনা আটক করা হয়েছিল।

/সিএ/এপিএইচ/