‘ধর্ষণ মামলার আলামত সংগ্রহে পুলিশের দক্ষতার অভাব রয়েছে’

সমাজকর্মী শিরিন হক (ছবি- নাসিরুল ইসলাম)

ধর্ষণ মামলার আলামত সংগ্রহে পুলিশের দক্ষতার অভাব রয়েছে’

ধর্ষণ মামলার আলামত সংগ্রহে পুলিশের দক্ষতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন হক। তিনি বলেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়ায় আলমত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ হয় না।’ বৃহস্পতিবার বাংলা ট্রিবিউন আয়োজিত বৈঠকিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আইনের যথাযথ ব্যবহার না করতে পারা, ফরেনসিক টেস্টের সীমাবদ্ধতা, প্রভাবশালীদের চাপ এবং সামাজিক কারণে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয় কিন্তু অপরাধী শাস্তি পায় না। সম্প্রতি ধর্ষণের ঘটনার ভয়াবহতা যেমন বেড়েছে তেমনই সংখ্যাও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ‘হ্যাঁ, বলতে দ্বিধা হচ্ছে’ শীর্ষক বৈঠকির আয়োজন করে বাংলা ট্রিবিউন।
মুন্নী সাহার সঞ্চলনায় বৈঠকিটি সরাসরি সম্প্রচার করে এটিএন নিউজ। বৈঠকিতে অংশ নিয়েছেন পুলিশ সদর দফতরের এআইজি সহেলী ফেরদৌস, নারী অধিকার নেত্রী শিরীন হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের কনসালটেন্ট ড. এসএম আতিকুর রহমান, পূর্ণিমা ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি পূর্ণিমা, বাংলা ট্রিবিউনের প্ল্যানিং এডিটর নজরুল কবীর ও চিফ রিপোর্টার উদিসা ইসলাম।
ধর্ষণের শিকার নারীদের অনেক বেশি সহায়তা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন শিরীন হক। তিনি বলেন, ‘পরিবারের সহায়তা আগে দরকার, এরপর আশেপাশের মানুষের দায়িত্ব। ৩৫ বছর ধরে কথা বলে যাচ্ছি। কিন্তু কী পরিবর্তন হলো?’
এত বছরের আন্দোলনে কী ভুল ছিল, এমন প্রশ্নও তোলেন মুন্নী সাহা। জবাবে শিরীন হক বলেন, ‘আমাদের হয়তো আরও কিছু করার ছিল, কিন্তু করতে পারিনি। কৌশলগত ভুল ছিল হয়তো।’
শিরীন হক বলেন, ‘‘ভাষাগত বিষয়ে একটা সমস্যা রয়েছে। ভুক্তভোগীকে আমরা ধর্ষিতা বলে চিহ্নিত করে ফেলি। গণমাধ্যমও কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই ভুল করে ফেলে। রাজনৈতিক নেতারাও কথায় কথায় ‘মা-বোনের ইজ্জত’ দিয়ে তাদের বক্তব্য শুরু করেন। ‘ইজ্জত’ শব্দটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের নতুন করে ভাবার আছে। আপনাদের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের কাছে আমি এই অনুরোধ পৌঁছে দিতে চাই। ‘ধর্ষিতা’ শব্দ ব্যবহার না হলে ভুক্তভোগী কিছুটা রেহাই পাবে। সবার সহযোগিতা দরকার।’’
শিরিন হক বলেন,  ‘‘ধর্ষণের ক্ষেত্রে কিছু শব্দ ব্যবহারে পরিবর্তন আনলে ধর্ষণ কমবে না, তবে পীড়া কমবে। দায়টা যে নারীর না, সেটা পরিষ্কার হবে। তাকে ‘ধর্ষিতা’ বললে দায় তার ওপর চাপানো হয়। ধর্ষণের ঘটনার পর সব গেল, সব গেল আহাজারি না করে তাকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সহযোগিতা করা অনেক বেশি দরকার।’’
/সিএ/টিএন/