ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলার পরিকল্পনা ছিল: আইজিপি

রাজধানীর পান্থপথের হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের পুরনো ভবনে আত্মঘাতী হওয়া জঙ্গির ৩২ নম্বরে আসা মিছিলে আত্মঘাতি হামলার পরিকল্পনা ছিল, বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।

আইজিপির সংবাদ সম্মেলন

এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘আজ জাতীয় শোক দিবস। শোক দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ৩২ নম্বরে আসবে। এখানে শ্রদ্ধা জানাবে। আমাদের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের গোয়েন্দারা জানতে পারে এই ৩২ নম্বর কেন্দ্র করে যেসব মিছিল আসবে তাতে আত্মঘাতী বোমা হামলা করা হবে। তারা শতশত লোক মেরে ফেলবে।’
আমাদের কাউন্টার টেরোরিজম ও পুলিশের গোয়েন্দারা তাদের ফলো করে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘তাদের (জঙ্গি) ফলো করে আস্তানা আমরা পেয়েছি। ওলিও একটি খুব সাধারণ হোটেল। হোটেলে তারা অবস্থান নিয়েছে তা আমরা জানতে পেরে তল্লাশি করে যখন সেখানে গেলাম তখন যে রেসপন্স পেয়েছি তাতে মনে হয়েছে সে জঙ্গি। এবং আমরা তাকে আটকে রাখি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই জঙ্গিকে আত্মসমর্পন করতে আনেকভাবে বলেছি। কিন্তু সে আত্মসমর্পন করেনি। পুলিশ বাধ্য হয়ে অপারেশনে গেছে। যখন পুলিশ অপারেশনে গেছে তখন সে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কক্ষের দরজা ভেঙে ফেলে। দরজা ভেঙে সে আরেকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে তখন পুলিশ গুলি করেছে। তার সঙ্গে সুসাইডাল ভেস্ট ছিল, ব্যাগপ্যাক ছিল তা দিয়ে সে নিজে আত্মঘাতী হয়েছে। এতে কক্ষের জানালা, বারান্দা উড়ে গেছে। বোঝা যাচ্ছে এটি শক্তিশালী বিস্ফোরক। এটা যদি কোনও জনসমাবেশে বিস্ফোরণ হতো তাহলে বড় ধরণের ক্ষতি হতো। আমাদের কাউন্টার টেরোরিজমের গোয়েন্দা তৎপরতার কারণে এই বিপদ থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছে।’

বিস্ফোরণের পর হোটেল ওলিওতিনি বলেন, ‘আমাদের কেউ হতাহত হয়নি। একজন পুলিশের গায়ে স্প্লিন্টার লেগেছে।’

আত্মঘাতি জঙ্গির পরিচয়ের বিষয় তিনি বলেন, ‘এই জঙ্গির বিষয় যতদূর আমরা জেনেছি তার নাম সাইফুল ইসলাম। সে মাদ্রাসায় পড়তো, খুলনা বিএল কলেজে পড়তো। ছাত্রজীবনে সে ছাত্র শিবির করতো। তার বাবা একটি মসজিদের ইমাম। তার বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া থানায়।’

আইজিপি বলেন, ‘জামায়াত-শিবির না হলে এই জাতীয় শোক দিবসে এটা ঘটাতে পারতো না। যারা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিল তারা এখনও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আজ এই জঙ্গি হামলার পরিবল্পনা করেছিল। আমাদের পুলিশ সেই জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা নতসাৎ করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আগস্ট এলেই আমরা বাড়তি সতর্ক হই। এ মাসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। সিরিজ বোমাহামলা করা হয়েছে। আরও অনেক ঘটনা। তাই আমরা সতর্ক ছিলাম। এই জঙ্গি নব্য জেএমবির তালিকাভুক্ত কিনা তা তদন্ত করে দেখতে হবে।’

একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধারের বিষয় জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘এতো বড় বিস্ফোরণের ঘটনায় হয়তো কেউ আহত হতে পারেন।’

এসময় অপারেশনের নাম জানতে চাইলে সিটিটিসি’র প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, “অভিযানের নাম ‘আগস্ট বাইট’।”

 

/এআরআর/এমও/