হোটেল ওলিও তালাবদ্ধ, অতিথিদের ছাড়া হবে রাতেই

তালাবদ্ধ হোটেল ওলিওর কলাপসিবল গেটজঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে আলোচনায় আসা রাজধানীর পান্থপথের হোটেল ওলিও’র পুরনো ভবনটি মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাতে তালাবদ্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত ভবনটি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এদিন সকালে হোটেলটির ৩০১ নম্বর কক্ষে অবস্থানরত সাইফুল নামে এক জঙ্গি সোয়াটের গুলি ও আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মিছিলে অংশ নিয়ে তার আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনার খবর পেয়ে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্স ন্যাশনাল ইউনিটের (সিটিটিসি) সদস্যরা তাকে শনাক্তের পর এ অভিযান চালায়। হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের ভবনটি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের অদূরে অবস্থিত।

এদিকে, অভিযান চালানোর আগে ওই হোটেল থেকে সরিয়ে নেওয়া অতিথি ও স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ(১৫ আগস্ট) রাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত। মঙ্গলবার রাত ১০টায় সরেজমিনে দেখা গেছে, হোটেলটির প্রধান ফটক তালাবদ্ধ রেখে নিচে নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে ৯ জন পুলিশ সদস্য। কলাবাগান থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এএসআই আনসারুল করিম জানান, তিনিসহ ৯ জন পুলিশ সদস্য হোটেলটির নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছেন। হোটেল ওলিও ছাড়া আর কোনও প্রতিষ্ঠান পুলিশ তালাবদ্ধ করেছে কিনা তা জানাতে পারেননি তিনি।

হোটেল ওলিওএর আগে সোমবার (১৪ আগস্ট) গোয়েন্দারা তথ্য পান, শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মিছিলে অংশ নিয়ে জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে। এজন্য এক বা একাধিক জঙ্গি ৩২ নম্বরের আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। এধরনের তথ্য পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় গত ২/৩ দিন ধরে ব্লক রেইড চালায় । সোমবার রাতে দ্বিতীয় দফায় পান্থপথ এলাকায় ব্লক রেইড চালান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

পুলিশের ব্লক রেইড চলাকালে পান্থপথের হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের অন্যান্য কক্ষের অতিথিরা দরজা খুলে দিলেও ৩০১ নম্বর কক্ষের দরজা খোলেনি বলে জানান কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তখন ব্লক রেইডে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যরা ওই কক্ষের দরজা বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর সকালে পুলিশ বার বার আত্মসমর্পনের আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি সাইফুল। বেলা পৌনে দশটার দিকে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

অভিযান চলাকালে সোয়াট সদস্যদের গুলি ও নিজের সঙ্গে থাকা বোমার আঘাতে নিহত হয় সাইফুল। এরপর ঘটনাস্থলে ক্রাইম সিনের কাজ শেষে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সাইফুলের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আগামীকাল (১৬ আগস্ট) তার ময়নাতদন্ত করা হবে।

/আরজে/টিএন/