প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো চকলেট রেখে দিয়েছে মুক্তামনি

মুক্তামনি (ফাইল ছবি)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো চকলেট রেখে দিয়েছে মুক্তামনি। বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহীম হোসেন। তিনি জানান, মুক্তামনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে চকলেটগুলো সবাইকে দেখাবে বলে সেগুলো রেখে দিয়েছে।

এদিকে মুক্তামনির শারীরিক অবস্থা এখন ভালো আছে, তবে তার বায়োপসি রির্পোট এখনও হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি এ তথ্য জানান।

ডা. সামন্ত লাল সেন ও মুক্তামনি (ফাইল ছবি)

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘মুক্তামনি ভালো আছে। তাকে এখনও আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)-তে রাখা হয়েছে। সে স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া করছে। বুধবার তার ড্রেসিং করা হবে।’ তবে বায়োপসি রির্পোট এখনও হাতে পাননি জানিয়ে ডা. সেন বলেন, ‘আরও হয়তো কয়েকদিন লাগবে রির্পোট পেতে।’

এ ব্যাপারে মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহীম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মুক্তামনি তার হাতের অপারেশন নিয়ে আশাবাদী এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো চকলেট সবাইকে দেখানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার আম্মুজান আজ  (মঙ্গলবার) বলে- সিঙ্গাপুরওয়ালারা যখন আমাকে নিলো না, তখন আমি আল্লাহর কাছে বলছি- আল্লাহ, যারা আমার অপারেশন করবে, তারা যেন আমার অপারেশনটা ভালো করে করতে পারে।’

মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহীম হোসেন (ফাইল ছবি)

মুক্তামনিকে আম্মুজান সম্বোধন করে তার বাবা আরও বলেন, ‘আম্মুজান আরও বলে, “শেখ হাসিনা আমারে চকলেট দিছে, সেটা আমি দেখবো, সবাইকে দেখাবো যে প্রধানমন্ত্রী আমার জন্য চকোলেট পাঠাইছে।” তাকে বারবার সেগুলো খেতে বললেও সে নিজের হাতে সেগুলো ব্যাগের ভেতর রেখে দিলো অপারেশনের আগে। আর বললো, চকলেট খেলে তো ফুরায়ে যাবে। তাই সেগুলো আমি খাবো না।’

মুক্তামনির শারীরিক অবস্থার ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েটা অপারেশনের ধকল সেরে উঠেছে, কথা বলছে হাসিমুখে। আইসিইউ’তে তার একা একা থাকতে ভালো লাগে না, সে কথাও বললো। কিন্তু তাকে তো আর কেবিনে দেবে না চিকিৎসকরা, সে কথা আমি মেয়েকে বুঝিয়ে বলেছি। আমার মেয়ে খুব শক্ত। কোনটা তার ভালো আর কোনটা তার মন্দ, সে সবই বুঝতে পারে। মেয়েটা যেন পুরোপুরি ‍সুস্থ হয়ে যায় সে প্রার্থনাই দিন-রাত করি।’

মুক্তামনির জন্য প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো চকলেট নিয়ে আসেন ডা. জুলফিকার লেলিন (ফাইল ছবি)

উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয় মুক্তামনিকে। এতদিন মুক্তামনির রোগটিকে বিরল রোগ বলা হলেও ৫ আগস্ট বায়োপসি করার পর জানা যায় তার রক্তনালীতে টিউমার হয়েছে। যেটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে হেমানজিওমা বলা হয়ে থাকে।

গত ১২ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে মুক্তামনির অস্ত্রোপচার শুরু করেন ত্রিশ জনের বেশি একটি চিকিৎসক দল। অস্ত্রোপচার করে তার হাত থেকে তিন কেজি মাংসপিণ্ড ফেলে দেওয়া হয়। এগুলো পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। আর অস্ত্রোপচারের আগের দিন মুক্তামনির জন্য চকলেট পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১০ আগস্ট রাত ১১টার দিকে বার্ন ইউনিটে গিয়ে মুক্তামনির হাতে চকলেটগুলো তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিন।

/জেএ/এএইচ/