সকালের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি যানজট ছড়িয়ে পড়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। দুপুরের দিকে নগরীর আকাশে রোদ দেখা গেলেও যানজট কমেনি। বৃষ্টির মাশুল গুনতে হয়েছে পুরো রাজধানীবাসীকে। যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে অসহায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশকেও।
মতিঝিলের একটি বেসরকারি অফিসের কর্মচারী রিয়াজুল ইসলাম অফিসে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে সাতটায় বাসা থেকে বের হন। খিলগাঁও থেকে তার অফিসে পৌঁছাতে আধা ঘণ্টার বেশি সময় লাগার কথা নয়। বৃষ্টির কারণে তিনি দেড় ঘণ্টা সময় হাতে নিয়েই বের হয়েছেন। কিন্তু তার অফিস পৌঁছাতে সময় লেগেছে এক ঘণ্টা ৪০ মিনিটের বেশি।
খিলগাঁও রেলগেটে দয়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অফিস আওয়ারে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ একটু বেশিই থাকে। এসময় কর্মব্যস্ত মানুষেরা কাজে যোগ দিতে বাসা ছেড়ে বের হন। তখন বৃষ্টি হলে যানজটের চিত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করে। কেননা, যখন বৃষ্টি হয় তখন সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা ও সিএনজির চাপ কম থাকে। আর বৃষ্টি শেষ হলেই এক সঙ্গে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। বুধবার নগরজুড়ে ঠিক একই চিত্র দেখা গেছে। যে কারণে নগরজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।’
রাজধানীর ফকিরাপুল মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, ড্রেন নির্মাণের জন্য একটি জেট মেশিন ফেলা রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ফকিরাপুল থেকে দৈনিক বাংলা সড়কের বাম পাশে ড্রেনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ড্রেনের জন্য খোঁড়া মাটি সড়কের বিশাল অংশ জুড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। এ সড়কটিতে যানবাহন চলাচলে কোনও গতি পাচ্ছে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
একই চিত্র দেখা গেছে, মতিঝিল, গুলিস্তান, পল্টন, কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, বাংলামটর, আজিমপুর, সায়েন্সল্যাব, কলাবাগান, ধানমণ্ডি-২৭, ফার্মগেট, রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা, খিলগাঁও, উত্তরা, গুলশান, বনানী, বারিধানাসহ নগরীর প্রায় সবকটি সড়কে। তবে এর মধ্যেও কিছু কিছু সড়কে ব্যকিক্রম দেখা গেছে। নগরীর প্রায় অধিকাংশ সড়কেই যখন তীব্র যানজট, ঠিক তখন কিছু কিছু সড়কে যান বাহনের চাপ চোখে পড়েনি। যানবাহনের চাপ কম থাকা সড়কগুলোর মধ্যে সোনারগাঁও মোড় থেকে পান্থপথ হয়ে রাসেল স্কয়ার, শাহবাগ থেকে ফার্মগেট, বিজয় সরণি থেকে সাত রাস্তা হয়ে মগবাজার, হাতিরঝিল ও গুলশানের বিভিন্ন এলাকা। বুধবার এই সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ কম হওয়ার কারণ হিসেবে গাড়ি চালকরা বলছেন, এই সড়কগুলো দিয়ে ব্যক্তিগত যানবাহনই বেশি চলাচল করে। আবার বুধবার সকালে বৃষ্টির সময় তীব্র যানজট দেখা দেওয়ায় অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হননি। যে কারণে কোনও কোনও এলাকার সড়কে তেমন একটা যানজট দেখা যায়নি।
/এসএস/ এপিএইচ/