কাস্টম ও বিমানবন্দর সূত্র জানায়, উড়োজাহাজে করে আনা আমদানিকারকদের মালামাল বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে সংরক্ষণ করা হয়। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের হয়ে বিমানবন্দর থেকে শুল্ক পরিশোধ করে মালামাল খালাসের দায়িত্ব পালন করে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান। ঢাকা কাস্টম হাউসের অধীনে অন্তত এক হাজার ২শ’টি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নামে আইডি কার্ড (পাস) ইস্যু করে ঢাকা কাস্টম হাউস। এই কার্ড দেখিয়ে তারা আমদানি কার্গো ভিলেজে প্রবেশ করেন।
সর্বশেষ ৯ জুলাই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমদানি কার্গো ভিলেজ থেকে ল্যাপটপ চুরির দায়ে রাবেয়া অ্যান্ড সন্স ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আব্দুল মোমিন নামের ওই কর্মী কার্গো ভিলেজ থেকে একটি ল্যাপটপ শার্টের ভেতরে লুকিয়ে চুরির চেষ্টা করেন। দায়িত্বরত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে হাতেনাতে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঠান। আদালতের সামনে মোমিন অভিযোগ স্বীকার করলে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কাস্টসের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কার্গো হাউসের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। কার্গো ভিলেজে যারা প্রবেশ করেন, তাদের যথাযথ অনুমতি আছে কিনা তা তদারকি প্রয়োজন। কাস্টম কর্তৃপক্ষ কোনও এজেন্টের অনিয়ম পেলে জরিমানা করে, লাইসেন্স স্থগিত করে, এমনকি লাইসেন্স বাতিলও করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবেশের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে অপরাধের হার কমে যাবে।’
সূত্র জানায়, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতে তাদের কর্মীদের নামে কার্ড ইস্যু করে ঢাকা কাস্টম হাউস। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও কর্মী চাকরি ছেড়ে গেলে তার নামে ইস্যু করা কার্ড কাস্টম হাউসে জমা দিতে হয়। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান এ নিয়ম না মানায় সেই কার্ড নিয়ে কার্গো ভিলেজে প্রবেশ করে অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন এজেন্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা।
কার্গো ভিলেজে চুরি প্রসঙ্গে প্রকাশ দেওয়ান বলেন, ‘কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের। কাস্টমস হাউস শুধুমাত্র শুল্ক প্রক্রিয়া তদারকি করে। ফলে মালামাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিমানের দায়িত্ব।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ‘কার্গো হাউসের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিমানের। তবে ওয়্যারহাউসটির সংস্কার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। বিমানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কিছু সমস্যার সমাধান করা হয়েছে এবং বাকি সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটিকে জানানো হয়েছে।’
ছবি:সাজ্জাদ হোসেন
/সিএ/এএম/এসএনএইচ/
আরও পড়ুন: