পাঠ্যপুস্তকের কনটেন্ট সংশোধন না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

জাতীয় শিক্ষা সংস্কৃতি রক্ষা আন্দোলনের অবস্থান ও সমাবেশহেফাজতের দাবিতে পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া প্রগতিশীল লেখকদের লেখা ফিরিয়ে না আনলে নতুন বছরের শুরুতেই কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় শিক্ষা সংস্কৃতি রক্ষা আন্দোলন। রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ের সামনে অসাম্প্রদায়িক পাঠ্যপুস্তকের দাবি ও শিক্ষা বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে ডাকা অবস্থান ও সমাবেশ কর্মসূচিতে এ হুঁশিয়ারি দেয় সংগঠনটি।

কর্মসূচি থেকে বক্তারা বলেন,দেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে এমন একটি পাঠ্যপুস্তক দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে যেখানে সাম্প্রদায়িকতার স্পষ্ট প্রতিফলন পাওয়া যায়। এই বই দেশে সংঘাত সৃষ্টি করবে। শিশুদের মননশীলতার বিকাশ ঘটাতে ব্যর্থ হবে। ভোটের রাজনীতির হিসাব নিকাশ করে প্রগতিশীল লেখকদের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তারা বলেন, সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস দেওয়ার পাঁয়তারা করছে।

সরকার মৌলবাদীদের কাছে পরাস্ত হয়ে আলোকিত মানুষের লেখা বাদ দিয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, পাঠ্যপুস্তক সংশোধনী কমিটির কোনও সুপারিশ সরকার আমলে নেয়নি। লোক দেখানো কমিটি করে শুধুমাত্র বানান ভুল সংশোধন করা হয়েছে। কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে বক্তারা বলেন, পাঠ্যপুস্তুক থেকে প্রগতিশীল লেখকদের বাদ দেওয়া গল্প ও কবিতা আগামী বছর অন্তর্ভুক্ত না করলে দেশে ছাত্র সমাজ কঠোর আন্দোলনে যাবে এবং পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করাতে বাধ্য করা হবে।

শিক্ষা বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে বক্তারা বলেন,যার টাকা আছে সে পড়ালেখা করতে পারবে এবং যার টাকা নেই তারা পড়তে পারবে না– এই নীতি বন্ধ করতে হবে। দেশে এখন মানুষ বেড়েছে, শিক্ষার্থীও বেড়েছে কিন্তু সেই তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় বাড়েনি। দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করারও দাবি জানান ব্ক্তারা।

সমাবেশে সমাপনী বক্তব্যে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রণয়ন করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় মানবিকতার দরকার, সাম্প্রদায়িকতার নয়। যত দিন শিক্ষা ব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িকতা ও বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ না হবে ততদিন আন্দোলন চলবে থাকবে।’ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, ছাত্রমৈত্রীর সদস্য সাদেকুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন ও ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জি এম জিলানী শুভ প্রমুখ।