শিশুশ্রম বন্ধের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান

বিয়াম মিলনায়তনে এএসডি আয়োজিত কর্মশালা২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম ও ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম বন্ধের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সব পর্যায়ে সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে সঠিকভাবে সচেতনতা গড়ে তোলা না গেলে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘জাতীয় শিশুশ্রম প্রতিরোধ নীতিমালা ও জাতীয় কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব খোন্দকার মোস্তান হোসেন। এসএসডি’র নির্বাহী পরিচালক জামিল এইচ. চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন শরফুদ্দিন আহমেদ।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোন্দকার মোস্তান হোসেন শিশুশ্রম বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও কর্মসূচি নিয়েছে। তবে এই কর্মপরিকল্পনা যথাযথ বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।’
গবেষণা প্রতিবেদনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিশুশ্রম নীতিমালার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনগুলোকেও যুগোপযোগী করার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।
বেসরকারি সংস্থা বিলস-এর সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা পূর্বনির্ধারিত ২০১৫ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছি। নতুন করে এই লক্ষ্যমাত্রা ২০২১ সাল নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্য পূরণ করতে হলে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।’ তা না করতে পারলে ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা কঠিন হবে বলেও তিনি দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে রেহিঙ্গা শিশুদের বিষয়ে এখনই সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএসএএফ-এর পরিচালক এস এ মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশ শিশু। তারা আগামীতে আমাদের শ্রমবাজারে যুক্ত হবে। বিষয়টি নিয়ে এখনই বিবেচনা করা প্রয়োজন।’
সভাপতির বক্তব্যে এএসডি’র নির্বাহী পরিচালক জামিল এইচ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অনেক নীতিমালা থাকলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নেই। এমনকি জনগণও অনেক নীতিমালা সম্পর্কে জানতে পারে না।’ গৃহশ্রমিক নীতিমালাসহ অন্যান্য নীতিমালার প্রচারে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান তিনি।
এসএসডি’র উপ-নির্বাহী পরিচালক মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মুক্ত আলোচনায় আরও অংশ নেন সিএসএস (বাংলাদেশ)-এর প্রধান পরামর্শক গোবিন্দ সাহা, শ্রমিক নেতা মো. আবুল হোসেন, আইএলওর’ সৈয়দা মুনিরা সুলতানা, অপরাজেয় বাংলার জুলফিকার আলী, সিএসইডি’র আকরাম হোসেন প্রমুখ।