মিয়ানমারে বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান ঢাবি উপাচার্যের

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখছেন ঢাবি উপাচার্যমিয়ানমারে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী নিধন বন্ধ করে সেখানে একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে বহুজাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আকতারুজ্জামান।  রাখাইনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সেনা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবিও জানান তিনি। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্মৃতি চিরন্তনে’ আয়োজিত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বরোচিত নির্যাতনসহ হত্যাযজ্ঞ এবং তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধনকালে উপাচার্য এ আহ্বান জানান।

ড. আখতারুজ্জামান জাতিসংঘের মাধ্যমে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ইরাক ও আফগানিস্তানে শান্তি রক্ষার জন্য যেভাবে বহুজাতিক বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে, মিয়ানমারেও তা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের বিচার করতে হবে।’  

মানববন্ধনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ঢাবি পরিবারউপাচার্য আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী যেভাবে বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, বর্তমানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও একইভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-নির্যাতন চালাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমারা রোহিঙ্গাদের ওপর একটি গবেষণা করেছিলাম। সেখানে দেখেছি তারা রাখাইনে বসবাস করছেন এক হাজার বছর ধরে। তারা ব্যবসার জন্য ওই এলাকায় এসেছিলেন আরব থেকে। তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিয়ানমারে বসবাস করলেও বর্মি জনগোষ্ঠী ছিল জলদস্যু। ‘মগ’রা দস্যুতা করতো, তাদের ইতিহাস ছিল মগের মুল্লুক। জলদস্যু বর্মিগোষ্ঠী রোহিঙ্গা নিধন করে তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণকে সাধুবাদ জানান ঢাবি উপাচার্য। তিনি কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। মানববন্ধন চলাকালে সংহতি প্রকাশ করে  বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ওয়াহেদুজ্জামান,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি সৈয়দ মাকসুদ কামাল, সিন্ডিকেট সদস্য খন্দকার বদরুল হক, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স প্রমুখ। এছাড়া, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, ঢাবি অফিসার্স সমিতির নেতা, ঢাবি কর্মকর্তা-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষার্থী অংশ নেন।