খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পরদিনই আদালতে হাজিরা দেবেন: মওদুদ আহমদ

 

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদআইন-আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে খালেদা জিয়া দেশে ফিরেই জামিন নেবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ কথা জানান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) আইন ও আদালতকে সম্মান দেখানোর জন্য তার চিকিৎসার কিছুটা অংশ বাদ দিয়ে দেশে চলে আসছেন। তিনি আসবেন এবং পরের দিন কোর্টে যাবেন। নিয়ম হলো যে, কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হলে আসামি যদি আবার আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে, সঙ্গে সঙ্গে ওয়ারেন্ট সেখানেই শেষ হয়ে যায় এবং জামিনও  পুনর্বহাল হয়। এটাই আমাদের আইনগত প্রক্রিয়া।’
আলোচনায় বেগম জিয়া ‘গ্রেফতারি পরোয়ানা’কে ভয় করেন না বলেও মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ।
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে আইনগত দিক তুলে ধরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘অনেকে জিজ্ঞাসা করেছেন, ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে তাহলে কী হবে এখন?  আমি বলবো, কিছুই হবে না। তিনি আসবেন এবং আদালতে হাজির হবেন। সরকার এই ভুল করবে না।’ ওয়ারেন্ট ইস্যু অনেকটা রাজনৈতিক প্রভাবে ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের জন্য হয়েছে বলে জানান মওদুদ আহমদ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর তদন্তভার দুর্নীতি দমন কমিশনকে দেওয়া আইনসম্মত হয়নি।’ তিনি বলেন,  ‘প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যত অভিযোগ- এগুলো উনি থাকতে আপনারা বলতেন, আমরাও জানতাম। উনি চলে যাওয়ার পরে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে, এটা সঠিক নয়।’

মওদুদ আহমদ আরও বলেন, ‘যেখানে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল আছে, সেখানে দুর্নীতি দমন কমিশনকে দিয়ে তদন্ত করানো- এটা তো আইন সম্মত হয়েছে বলে আমি মনে করি না। এটা হলো তাকে (এসকে সিনহা) হেয় প্রতিপন্ন করা। তাকে হেয় করার অর্থ হলো, বিচার বিভাগকে হেয় প্রতিপন্ন করা। প্রত্যেক বিচারককে হেয় প্রতিপন্ন করা। এই ভুলের মাশুল সরকার কিভাবে দেবে, কে দেবে, আমি জানি না।’

তিনি বলেন, ‘যা কিছু ঘটেছে এখন পর্যন্ত, এটা সারাজাতির জন্য লজ্জার। আমাদের মাথা নিচু হয়ে যায়। প্রধান বিচারপতি কোনও ব্যক্তি নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানকে এই সরকার ইচ্ছা করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ভাবমূর্তি নেই, আমরা হারিয়ে ফেলেছি ওইসব ঘটনার জন্য। সরকার হয়ে আপনি একটি সাংবিধানিক স্তম্ভকে ভেঙে দিলেন।’

সুপ্রিম কোর্টে প্রশাসনিক রদবদল করাও বিচার বিভাগের ওপর সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও সংবিধান সম্মত হয়নি বলেও দাবি করেন মওদুদ আহমদ।

আরও পড়ুন: 
খালেদার গ্রেফতারি পরোয়ানা হাতে পায়নি পুলিশ

চার পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া