সড়ক পরিবহন ও সড়ক নিরাপত্তা বিষেজ্ঞরা বলছেন, যানজটের অন্যতম কারণ ‘রাইট টার্ন’। সাধারণত যানজট নিরসন করতে রাইট টার্নের সুবিধার জন্যই বসানো হয় ফ্লাইওভার। কিন্তু সেই ফ্লাইওভারে যদি বিরতিহীন ‘রাইট টার্ন’ এড়ানোর ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে ট্রাফিক সিগন্যালের প্রয়োজন হয়। মূলত সে জন্যই এই ফ্লাইওভারের মৌচাক ও মগবাজার অংশে দু’টি সিগন্যাল পয়েন্ট বসানো হয়েছে। কিন্তু তাতে যে সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে সিগন্যাল বাতির নির্দেশ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এতে বাড়ছে যানজট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক, পরিবহন ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফ্লাইওভার হচ্ছে সিগন্যাল দূর করে দ্রুত যাতায়াত নিশ্চিত করার একটা মাধ্যম। আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম ফ্লাইওভারের ওপর ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন করে। এটা ভুল পরিকল্পনারই অংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ফ্লাইওভারের নকশা তৈরি করেছে বিদেশি প্রতিষ্ঠান। তারা বিদেশের বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করেই নকশা তৈরি করেছে। বিদেশিদের তৈরি করা নকশা আমরা দেশীয়রা বুঝে নেইনি। আর বিদেশিরা সিগন্যাল মানে, কিন্তু আমাদের দেশে সিগন্যাল মানার প্রবণতা নেই। সিগন্যাল যেমন কেউ মানে না, তেমনি ৩০ সেকেন্ড সিগন্যালও পর্যাপ্ত না। ফ্লাইওভারে যানজটের এটিও বড় একটি কারণ।’
শুক্রবার দুপুরে ফ্লাইওভারটিতে যানবাহনের চাপ ছিল হাতেগোনা। ট্রাফিক সিগন্যাল দুটিতে অটো মেশিনে সিগন্যাল বাতির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি ৩০ সেকেন্ড পরপর লাল ও হলুদ বাতি জ্বলে ওঠার মাধ্যমে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু তা কাজে আসছে না। আগের মতোই পুলিশ হাতের ইশারা দিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছে।
এদিকে, ফ্লাইওভারে উঠে অনেক যানবাহনকে পথ হারিয়ে ফেলতে দেখা গেছে। ফ্লাইওভারের মৌচাক পয়েন্টে ইউ টার্ন করার পথ থাকলেও পুলিশ বাধা দিচ্ছে । বলা হচ্ছে- ফ্লাইওভারে কোনও ইউটার্ন নেই। এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেক চালক।
এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল বলেন, ‘মালিবাগ-মৌচাকের মতো জায়গায় ফ্লাইওভার নির্মাণ করাই অনেক কঠিন কাজ ছিল। ফ্লাইওভারের এ দুটি স্থানে একাধিক সংযোগ মিলিত হয়েছে। এ কারণে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া, উপায়ও ছিল না। এজন্য দুটি স্থানে গাড়ি কিছুটা দাঁড়াতে হতে পারে।’
সিগন্যাল বাতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। এটা আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।’